আন্তর্জাতিক

মৃত্যুর পর ইউটিউবে স্বপ্ন পূরণ হলো ফিলিস্তিনি শিশুর

  প্রতিনিধি ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৭:৪৯:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

মৃত্যুর পর ইউটিউবে স্বপ্ন পূরণ হলো ফিলিস্তিনি শিশুর

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শিশু আউনি এলদৌস মারা যাওয়ার পর তার একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। গত বছরের আগস্টে ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল গাজার বাসিন্দা এই শিশু। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে হাসতে হাসতে একটি স্বপ্নের কথা জানায় ভিডিওতে। ইউটিউবে তার গেমিং চ্যানেল নিয়ে ছিল সেই স্বপ্ন।

সে জানায়, ‘‘আমি আমি গাজার ফিলিস্তিনি এক বাসিন্দা। বয়স ১২ বছর। এই চ্যানেলের লক্ষ্য হল সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এক লাখ কিংবা ৫ লাখ কিংবা দশ লাখে পৌঁছানো।’’ ভিডিওটি শেষ করার আগে দৃশ্যের বাইরে যাওয়ার জন্য এক হাজার সাবস্ক্রাইবারের জন্য শান্তি কামনা করে সে।

এক বছরের কিছু বেশি সময় পর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত প্রথম ফিলিস্তিনি শিশুদের একজন হয়ে ওঠে গাজার আউনি। স্বজনরা বলছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের বন্দুকধারীরা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশের কয়েক ঘণ্টা পর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সেদিনই আউনিদের বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান আঘাত হানে।

আউনির সেই ভিডিওটি এখন ৪০ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে। তার রেসিং, যুদ্ধ ও ফুটবল গেমের অন্যান্য ভিডিও লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন। আর প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করেছেন।

ফুফু আলা’আর কাছে আউনি ছিল ‘‘অত্যন্ত সুখী এবং আত্মবিশ্বাসী শিশু।’’ কম্পিউটারের প্রতি ভালোবাসার কারণে পরিবারের আরেক সদস্য তাকে ‘‘ইঞ্জিনিয়ার আউনি’’ বলে ডাকতেন। অন্যদের কাছে ১৩ বছর বয়সী এই গেমার গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারানো শিশুদের প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

ইউটিউবে আউনির একটি ভিডিওর নিচে একজন কমেন্টে লিখেছেন, দয়া করে আমাদের ক্ষমা করে দিও। তোমার মৃত্যুর আগে যদি তোমার সাথে পরিচয় হতো!

গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের এক তৃতীয়াংশের বেশিই শিশু। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গাজাকে শিশুদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা বলে অভিহিত করেছে।

আকস্মিক বিস্ফোরণ, অতঃপর মৃত্যু

হামাসের হামলার দিনই ইসরায়েল পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে। আলা’আ সেদিনের কথা কল্পনা করে বলেন, কেবল একটি বোমা গাজা শহরে তার পরিবারের বাড়িটি ধ্বংস করে দেয়। ওই দিন রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তার ফোনের লাইট জ্বলে ওঠে। এতে বন্ধুদের কাছ থেকে আসা ক্ষুদেবার্তা দেখতে পান তিনি। আউনিদের বাড়িতে হামলা হয়েছে।

উপত্যকার জেইতুন বসতি এলাকার তিনতলা একটি ভবনের প্রতি তলায় আউনির পরিবারের লোকজন বাস করতেন। আউনি ওই ভবনের একটি তলায় তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে থাকতো। পরিবারে তার বড় দুই বোন ও দুই ছোট ভাইও ছিল।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by