দেশজুড়ে

রাজনৈতিক পরিচয়ে চলছে অবৈধ বালি উত্তোলন

  প্রতিনিধি ১৭ অক্টোবর ২০২৩ , ৩:৩৪:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক পরিচয়ে চলছে অবৈধ বালি উত্তোলন

একাধিক অভিযান,জরিমানা,স্থানীয় ভাবে সচেতনতা সৃষ্টির পরেও বন্ধ করা সম্ভব হয়নি অবৈধ বালি উত্তোলন কর্মকাণ্ড। চারপাশ ম্যানেজ করে ঠিকই নিজেদের আখের ঘোছাতে ব্যস্ত বালি খেকো সিন্ডিকেট।বালি উত্তোলনের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হওয়ায় স্থানীয় অনেকেই তাদের পরিচয় জানার পরেও ঝামেলা এড়ানোর জন্য নাম প্রকাশ করতে চায় না।

বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক,ভাগ্যকুল,হলুদিয়া,কদুখোলা সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলছে অবৈধ বালি উত্তোলন। ইজারা বর্হীভুত বালি উত্তোলনের অস্তিত্ব পেলেও অনেক ক্ষেত্রেই জড়িতদের পরিচয় পাওয়া যায় না।অনেক ক্ষেত্রেই বান্দরবান জেলা সিমানায় বালি উত্তোলন করে বদ্দুয়ারা হয়ে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাতকানিয়ায়।

সরজমিনে দেখা যায় বান্দরবান সদর উপজেলার ৪নং সুয়ালক ইউনিয়নে, সুয়ালক বাজার হতে সুলতান পুর যাওয়ার পথে সিকদার পাড়া,(কামালের বাড়ির সামনে) সুয়ালক খালে জেগে উঠা চরে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে প্রায় প্রতিদিনই দিনে এবং রাতে খালের চর হতে বালি উত্তোলন করে ট্রাকে করে তা বিক্রি করছে বালি খেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

বালি উত্তোলনের কারনে ইতিমধ্যেই সুয়ালক খালের পাড় ভাঙ্গতে শুরু করেছে এতে ভাঙ্গন হতে পারে আশপাশের আবাসিক ঘরবাড়ি। এছাড়া খালের পার ঘেষে আবাদি কৃষি জমিও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে,প্রভাব পড়তে পারে আশপাশের পাকা রাস্তায়। 

খোঁজ নিতে গিয়ে জানাযায় বালি উত্তোলনের সাথে যিনি প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছেন তার নাম তোফাজ্জল হোসেন খাঁন জনি।

এ বিষয়ে তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেন,এবং বলেন আমরা কয়েকজন এই কাজের সাথে জড়িত আছি,এখন এ বিষয়ে কথা বলবো না পরে বলবো এবং এ বিষয়ে আপনাদের সাথে যোগাযোগ করবো।

পরে ফোনে কারা কারা এই কাজে সম্পৃক্ত আছে জানতে চাইলে তিনি জানান তার সাথে সদর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক, দেলোয়ার হোসেন রাসেল, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি,কামাল উদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন বালু উত্তোলনের সাথে সম্পৃক্ত আছে।

বালি উত্তোলনের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন হবে জানার পর সদর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক, দেলোয়ার হোসেন রাসেল, প্রতিবেদক কে বলেন টাকা দিলে নিউজ হয়না আর টাকা না দিলে নিউজ হয়,আমরাও পাল্টা একটা নিউজ বানাবো।পরে একাধিকবার সমজতার জন্য প্রতিবেদক কে ফোন করে সমজতা না হওয়ায় প্রতিবেদককে ফাঁসানোর হুমকি প্রদান করে।

এ বিষয়ে ৪নং সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বালি উত্তোলনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুস ছবুর কে তিনি পাঠিয়ে বালি উত্তোলন না করতেও বলেছেন,তবে বর্তমানেও যে বালি উত্তোলন কাজ চলছে সে বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।

অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে অবগত হওয়ার পর দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মিরা।

উল্লেখ্য বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৬২ নং আইনের ৪ (খ) অনুযায়ী আবাসিক এলাকা হইতে এবং যানবাহন চলাচলের সড়ক হতে সর্বনিম্ন ১ (এক) কিলোমিটার এর দুরুত্বের ভিতরে বালি উত্তোলন সম্পুর্ন আইনগন ভাবে নিষিদ্ধ।এবং ইজারা ব্যতীত কোন রূপ বালি ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই আইনে।

এই আইনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, তাদের সহায়তাকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কে অনূর্ধ্ব ২(দুই) বৎসর কারাদন্ড বা সর্বনিম্ন ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা হতে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন বলে আইনে উল্লেখ আছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by