প্রতিনিধি ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৭:১৩:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক:
রাষ্ট্রীয় সম্পদ হরিলুট করার পর এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পানির দাম বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘দেশকে দারিদ্র, দুর্নীতিগ্রস্ত ও তীব্র অসাম্যের মধ্যে নিক্ষেপ করে এরা জনগণকে ভাতে ও পানিতে মারার সকল বন্দোবস্ত সম্পন্ন করছে।’ আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গত সোমবার ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে। প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ বোর্ড সভায় ৪০ শতাংশ পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। বর্তমানে প্রতি ১০০০ লিটার পানির আবাসিক গ্রাহকরা ঢাকা ওয়াসাকে দেয় ১৫.১৮ টাকা। আর বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে এই দাম ৪২ টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর ২৫ মে ওয়াসা পানির দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ প্রতি ইউনিট পানির দাম এখন ১৪.৪৬ টাকা থেকে বেড়ে ১৫.১৮ টাকা হলো। আর বাণিজ্যিক সংযোগে প্রতি ইউনিট পানির দাম ৪০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৪২ টাকা করা হলো। ২০২০ সালের এপ্রিলেও পানির দাম বৃদ্ধি করেছিল ওয়াসা। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, ২০১৮ সালের জুলাইতে, ২০১৭ সালের আগস্টেও পানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ওয়াসার এমডি পানির দাম এখন যা আছে সেটা থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’
পানিকে জীবনের অপর নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অবৈধ সরকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ হরিলুট করার পর এখন মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় যে পানি সেটির দাম বৃদ্ধি করছে। দেশকে দরিদ্র, দুর্নীতিগ্রস্ত ও তীব্র অসাম্যের মধ্যে নিক্ষেপ করে এরা জনগণকে ভাতে ও পানিতে মারার সকল বন্দোবস্ত সম্পন্ন করছে। আমি ওয়াসা কর্তৃক পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ধরনের অমানবিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া গুম বিষয়ক জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ১২৬তম বৈঠক নিয়ে রিজভী বলেন, ‘এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় বাংলাদেশসহ বিশ্বের হাতেগোনা আরও কয়েকটি দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপকর্ম-গুমের অভিযোগ পর্যালোচনা। যেহেতু বর্তমান সরকার গুমের সঙ্গে জড়িত, সেই কারণে তারা গুম নিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে উত্থাপিত অভিযোগ গায়ে মাখে না। কিন্তু কথায় বলে, চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। খুনিদের বিদেশে পালানোর পথ রুদ্ধ হয়ে আসতে থাকায় একইসঙ্গে দেশে জনরোষের ভয়ে নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রীরা উদ্ভট কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এর আগে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপেয়ারেন্সেস কর্তৃক বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ সদস্যরা সরকারের নির্দেশে দফায় দফায় গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার নামে হয়রানি করে এবং পুলিশ সদস্যরা গুমের শিকার ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন এবং পরিবার তথ্য গোপন করেছে এই মর্মে কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।’
গুম হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে দুই মন্ত্রীর এই ধরনের উপহাস খুবই নিষ্ঠুর, অশালীন ও বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, বিরোধী শক্তিকে দমন করতে অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকারের গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, নিপীড়ণের কথা আজকে বিশ্ব দরবারে প্রমাণিত।