দেশজুড়ে

রুপগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনে নুরুজ্জামান খানকে চান এলাকাবাসী

  প্রতিনিধি ২৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৫:২০:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

রুপগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনে নুরুজ্জামান খানকে চান এলাকাবাসী

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আর কিছুদিন পরে ২১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ধনীদের তীর্থস্থান হিসাবে পরিচিত রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন। কারা হচ্ছেন প্রার্থী। প্রার্থীদের মধ্যে কে কার চেয়ে এগিয়ে, কে কোন দল বা গোষ্টি সমর্থিত, কে কত টাকার মালিক আর কার গ্রহণযোগ্যতাই বেশি, এ সকল নিয়ে চায়ের দোকান, রাস্তা-ঘাট, অফিসপাড়া, বাড়ি-ঘর সর্বত্র এখন আলোচনা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে রূপগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিপুল জয়লাভ সমস্ত হিসাব নিকাশ পাল্টে দিয়েছে রূপগঞ্জের রাজনীতি। প্রভাবশালী শিল্পগ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপ প্রকাশ্যেই গাজীর বিপক্ষের প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়াকে সমর্থন এবং তার পক্ষে কাজ করায় বেশকিছু দিন ধরেই রূপগঞ্জে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজমান। গাজীর বিজয় এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

প্রথম অবস্থায় শোনা গিয়েছিলো যেহেতু রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলাম প্রকাশ্যেই টাকা-পয়সা খরচ করে এমপি নির্বাচনে গাজী পক্ষে কাজ করেছেন।এর পুরস্কার স্বরূপ হয়ত গোলাম দস্তগীর গাজী আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে তাকে প্রার্থী বানাবেন এবং জিতিয়ে আনবেন দিন যত গড়িয়েছে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হতে রফিকুল ইসলামের অনীহা ততোই বেড়েছে। তিনি রাজনীতিতে থাকলেও ব্যবসাকে গুরুত্ব দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেন বলে তার বিশাল কর্মী বাহিনীকে আশ্বস্ত করেছেন। এরপরেই নাম উঠে আসে গোলাম দস্তগীর গাজীর পুত্র পাপ্পা গাজী উপজেলা নির্বাচন করবেন।

এই আলোচনাটাই একসময় জোরালো থেকে আরো জোরালো হতে থাকে। উপজেলায় নির্বাচন করবেন এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজী এলাকায় গণসংযোগ বাড়িতে দেন কয়েক গুণ। তার কর্মীরা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে পাপ্পার পক্ষে মাঠ গোছাতে শুরু করে দেন। প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকল জায়গায় আলোচনায় উঠে আসে রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে পাপ্পা গাজী চেয়ারম্যান নির্বাচন করছেন। এবং বিরোধীদল যেহেতু নির্বাচন করবে না সেজন্য তিনিই হচ্ছেন আগামীর রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান।

পাপ্পা সমর্থকরা এ নিয়ে যখন স্বপ্ন দেখার চূড়ান্তে অবস্থান করছেন ঠিক তখনই সরকারের একটি ঘোষণা পাপ্পা কর্মীদের জীবনে নেমে এসেছে অমানিষার ঘোর অন্ধকার।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কোন মন্ত্রী, এমপির সন্তান-স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করেন তাকে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমনিতেই রূপগঞ্জে আলোচিত হচ্ছিলো পাপ্পা গাজী উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর জয়লাভ করলে গাজী পরিবার একাধারে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নিজেদের সাম্রাজ্য আরো সুসংগঠিত করতে পারবেন। গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক তিনি এলাকার এমপি। তার স্ত্রী হাসিনা গাজী তারাবো পৌরসভার মেয়র এবং ছেলে পাপ্পা গাজী নির্বাচিত হলে উপজেলা পরিষদটিও তাদের দখলে আসবে। যা এতোদিন বসুন্ধরা গ্রুপ সমর্থিত শাহজাহান ভূঁইয়ার দখলে ছিল। শাহজাহান ভূঁইয়া এবার নির্বাচন করছেন না বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা।

এমপি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ফলে বসুন্ধরা গ্রুপ তার মাথা থেকে ছাতি সরিয়ে নিয়েছে। এ কারণে তিনি অনেকটাই একা হয়ে পড়েছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই যখন রূপগঞ্জের অবস্থান সেখানে কে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন সেদিকে তাকিয়ে আছেন রূপগঞ্জবাসী। পাপ্পা গাজীর অবর্তমানে আলোচিত হচ্ছে তাদেরই সহচর বালু হাবিবের নাম। অন্যদিকে ক্যাসিনো সম্রাট সেলিমের নামও আলোচনা আছে। দুইজনেই এলাকায় পরিচিত নাম। এলাকাবাসী বলছেন, এদের টাকা হয়েছে খুব বেশি দিন আগে নয়। জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা এদের নেই।

ভূমি সন্ত্রাস, মাদকে জর্জরিত রূপগঞ্জের জন্য তারা এমন একজন মানুষকে খুঁজছেন যিনি সর্বজন গ্রহণযোগ্য। যিনি লোভ লালসার ঊর্ধ্বে। নিজের পকেট গোছাতে নয়, সমাজের জন্য মানুষের জন্য কাজ করবেন। এই রকম একজন মানুষকে হন্য হয়ে খুঁজছেন রূপগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ।এলাকার বিভিন্ন মানুষের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তারা এমনই একজন মানুষকে খুঁজে পেয়েছে। যিনি নিরহংকার, সদালাপি, পরোপকারী। মানুষকে দিতে যিনি ভালোবাসেন।

যিনি ডান হাতে দান করলে বাম হাত জানে না। একসময় এই মানুষটি দাপটের সাথে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নে দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান ছিলেন। স্বর্ণপদক প্রাপ্ত একজন চেয়ারম্যান। দেশের শীর্ষ স্থানীয় ঠিকাদার, এনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান। নুরুজ্জামান খানই হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাকে রূপগঞ্জের মানুষ খুঁজে বের করেছেন, আগামীর নেতৃত্বে চাবি তার হাতে তুলে দিতে চান এলাকার মানুষ।

যদিও এই মানুষটি রাজনীতি থেকে নিজেকে অনেক আগেই দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। তিনি নিজেও চান না আর রাজনীতিতে আসতে। তবে এ মুহূর্তে নুরুজ্জামান খানের মতো একজন মানুষ দরকার যিনি রূপগঞ্জের মানুষকে বাঁচাতে পারেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by