রাজশাহী

শিক্ষিত হয়েও কৃষিতেই সফল তৌহিদ

  প্রতিনিধি ১৬ জানুয়ারি ২০২২ , ৯:৩৪:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

আকতার হোসেন বকুল, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) : মা-বাবার অতি আদরের একমাত্র সন্তান মো. তৌহিদ হাসান। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে অবশেষে কিনা পূর্ব বংশধরের আদি পেশা কৃষি কাজকেই বেছে নেয় তৌহিদ। ইঞ্জিনিয়ারিংয় পাশ করে প্রথমে কিছুদিন রাজধানী ঢাকায় ভালো বেতনের চাকরিও করেন সে।

কিন্ত ইট-পাথরে ঘেরা যানজট যুক্ত শহরে তার কিছুতেই মন বসে না। চাকরি ছেড়ে অবশেষে বাবা আর শ্রমিকের সঙ্গে গায়ে কাদা-মাটি লাগিয়ে নিজেদের জমিতে ফসল উৎপাদন আর পুকুরে মাছ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এমন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত যুবক কৃষি ও মৎস্য দপ্তরে দক্ষ এবং সফল উদ্যোক্তা তৌহিদ হাসানের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই গ্রামে। হারুন-উর-রশিদ ও আমেনা বিবি দম্পতির একমাত্র সন্তান তৌহিদ হাসান। বাবার সঙ্গে মাঠে যোগ দেওয়ার আগে সে ২০১৪ সালে জয়পুরহাট যুব উন্নন অধিদপ্তর থেকে কৃষির আধুনিক পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের জমিতে প্রায় সকল প্রকারের শাক-সবজি, ধান ও আলু চাষ এবং পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে প্রথমেই সফল হন তিনি। এরপর থেকে আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

লেখাপড়া শেষে চাকরির পিছনে না দৌড়ে কৃষি ও মৎস্য চাষে সফল তিনি। এসব থেকে প্রতিবছর তার আয় হয় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। তৌহিদ হাসানের জমিতে দেশী-বিদেশী বেগুন, মরিচ, বাঁধা ও ফুল কপি, টমেটো, করলা, শিম ও লাউসহ শীতকালীন বিভিন্ন রকমের সবজিতে ভরপুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিকসহ আলুর ক্ষেত পরির্চচা করতে। দেখা যায়, শ্রমিকের কাজ করে অনেকেই সংসার চালাচ্ছেন। পরবর্তীতে গরু ও মুরগীর ফার্ম করে এলাকার শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে জানান তিনি।

 

তৌহিদের বাবা আক্ষেপ করে বলেন, ছেলেকে অনেক টাকা খরচ করে লেখাপড়া করালাম ভালো চাকরির আশায়। ছেলে কিছুদিন ঢাকায় চাকরিও করল। এখন কিনা চাকরি ছেড়ে বাড়ি এসে আমার সঙ্গে জমিতে কৃষি কাজ ও মাছ চাষ করছে। চাকরি ছেড়ে এসব করায় প্রথমে মন খারাপ হলেও এক ভালো লাগে ছেলের এসব কাজ দেখে। শুধু চাকরি করেই যে টাকা উপার্জন করা যায় এমন ধারনা ছেলেকে আমার ভুল ভেঙ্গেছে বলেও হারুন জানান। আমরা পূর্ব পুরুষরা যা করতে পারেনি ছেলে তা করে দেখালো। আমার ছেলে এখন সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছে।

 

Powered by