বাংলাদেশ

সব দেশেই সেন্সর বোর্ড আছে, বাংলাদেশেও থাকবে: তথ্যমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৭:০৫:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

পৃথিবীর সব দেশেই সেন্সর বোর্ড আছে, বাংলাদেশেও এ বোর্ড থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নেতাদের সাথে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সুদিন ফিরে এসেছে। কারণ, এখন অনেক ভালো ভালো ছবি নির্মাণ হচ্ছে। সরকারও প্রায় সব ধরনের সিনেমায় অনুদান দিচ্ছে এবং তা বাড়িয়েছে। ফলে বাংলাদেশের সিনেমা এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বেও প্রাধান্য পাচ্ছে। তাই চলচ্চিত্রের সকল শিল্পী ও কলাকুশলীরা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু ১৯৫৭ সালে। আমাদের অনেক ছবি স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রেখেছে। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। আমাদের ছবি আমাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এখন ইউরোপ আমেরিকায় প্রাধান্য পাচ্ছে। চলচ্চিত্র শিল্প ভালোর দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আগে চলচ্চিত্রের জন্য ১০ কোটি দেওয়া হলেও এখন ২০ কোটি দেওয়া হয়। আমরা আর্ট ফিল্ম, বাণিজ্যিক শর্ট ফিল্মসহ সব ধরনের সিনেমায় অনুদান দিয়ে থাকি। তবে বাণিজ্যিক ছবি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ফান্ড করা হয়েছে। সেখান থেকে যে যার মতো আবেদন করে ঋণ নিতে পারছে। যারা অনুদান নিয়ে সিনেমা রিলিস করেননি আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। অনেকে টাকা ফেরত দিচ্ছে আবার কেউ কেউ বানাচ্ছে। আমরা তাদের শর্ত দিয়েছি যে অন্তত ১০টি সিনেমা হলে মুক্তি দিতে হবে।

চলচ্চিত্র শিল্পের দুরবস্থার সময় দেশের অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে ৬৫টি হলে নেমে আসছিল। তথ্যমন্ত্রী বলেন, নানা পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সেখানে এখন ২৫০’তে নিয়ে গেছি। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। চলচ্চিত্র শিল্পে সুদিন ফিরে আসছে। সেজন্য চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। যখন চলচ্চিত্র বড় হবে তখন আগের মতো ১ হাজার হল চালু থাকবে, তখন প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হবে। বিশ্বাঙ্গনে আমাদের চলচ্চিত্র কিছুটা জায়গা করে নিয়েছে। ভবিষ্যতে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের চলচ্চিত্র আরও এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আমরা এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে একটা ফান্ড করেছি। ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছি। করোনার সময় ভয়ে কেউ দরখাস্ত করেনি। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিটিং করেছি। এখন ঋণের আবেদন বাড়ছে। এখন ভাল সিনেমা হচ্ছে তাই আবেদন বাড়ছে। প্রথমে পাঁচ কোটি দিয়েছিলাম সিনেমা হলের জন্য পরে এটা দ্বিগুণ করে দিয়েছি।

সেন্সরবোর্ড সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃত কোনও ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়, সেখানে প্রকৃত ঘটনা থাকতে হবে। যদি প্রকৃত ঘটনা চলচ্চিত্রে না থাকে সেক্ষেত্রে সেন্সর বোর্ড তা আটকে দেবেই। আপনি যে চলচ্চিত্রটির কথা ইঙ্গিত করেছেন, সেটিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তাদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক দেশেই চলচ্চিত্রের জন্য সেন্সরবোর্ড আছে। সেন্সর বোর্ড ছাড় দিলেই পরে রিলিজ হয়, যারা বলে তারা না জেনে বলে। ভারতে সবচেয়ে বড় সেন্সর বোর্ড রয়েছে। ভারতের যে প্রান্তেই সিনেমা হোক না কেন দিল্লিতে সেন্সরবোর্ডের কাছে তা পাঠাতে পারে। বাংলাদেশে সিনেমা শিল্পের পর থেকেই সেন্সরবোর্ড রয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তা আমরা দেখছি।

এসময় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আগের চেয়ে এখন ভালো ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। ‘পরান’, ‘হাওয়া’, ‘শান’, ‘গলুই’, ‘দিন দ্য ডে’ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে হবে। আগে ১ হাজার ৪০০ সিনেমা হল ছিল, তা না পারি অন্তত ১ হাজার যেন খোলা রাখতে পারি। সেজন্য সিনেমা হল মালিকদের সুবিধা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, টাকা বাড়িয়েছেন, নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা যদি হল টিকিয়ে না রাখতে পারি তাহলে ছবিগুলো কোথাও চলবে।

তিনি আরো বলেন, যারা বিরোধীতা করছেন তারা এসব বাদ দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করুন। হল ছাড়া চলচ্চিত্র টিকবে না। হল টিকিয়ে রাখতে হলে সিনেমা হল টিকিয়ে রাখতে হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by