দেশজুড়ে

সরাইলে পুকুরের পাড় ভেঙ্গে বিলীন হচ্ছে ৩০ পরিবার

  প্রতিনিধি ৫ জুলাই ২০২০ , ৭:৫৭:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. মাহবুবুর রহমান খন্দকার, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলাধীন সদর ইউনিয়নের স্বল্প নোয়াগাঁও গ্রামে পুকুরের পাড় ভেঙ্গে প্রায় ৩০টি বাড়িঘর বিলীন হতে চলেছে। ইতিমধ্যে ৩টি বসত ঘর পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থরা গরীব হওয়ায় অর্থাভাবে এ ঘরগুলো এখনো উঠানো সম্ভব হয়নি। জানা গেছে, এ পুকুরকে ঘিরে প্রায় কয়েক শত বছর পূর্বে অত্র গ্রামে বসতি গড়ে উঠেছিল। পুকুরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন থাকার পর প্রায় ১০ বছর পূর্বে এক রিয়েল এস্টেট সিন্ডিকেটের কাছে এটি বিক্রি করে দেয়া হয়। সিন্ডিকেট দালালচক্র কিছু অংশ ভরাট করে কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর গ্রামের কিছু প্রভাবশালী টাকা পাওয়ার নামে জোরপূর্বক পুকুরে মাছ চাষ শুরু করে এবং পুকুরের পাড় না বাধাঁই পাড়হীন থাকায় ঘরবাড়ি ভাঙ্গতে থাকে। । এদিকে পুকুরের পাড় বেধেঁ মাছ চাষের কথা বললে, মাছচাষীরা মানুষকে হুমকি দিয়ে থামিয়ে দেয়। গত কয়েকদিন আগে ৩টি ঘর পুকুরে পড়ে গেছে। বাকী ৩০টির মতো ঘর যেকোন সময় পুকুরে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্রামের দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল বিহীত ব্যবস্থার জন্য নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। আবেদন গ্রহণকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা প্রিয়াংকাকে দায়িত্ব প্রদান করেন। এদিকে গ্রামের দরিদ্র পরিবার গুলো দিশেহারা। পুকুরের মালিক নতুন হাবলী (আখন্দ বাড়ি) শুক্কর ডিলারের ছেলে মুক্তার হোসেনের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুকুরটি ভরাট করে ফেলব। গ্রামবাসী জানায়, ভরাট করার কথা ১০ বছর ধরেই বলে আসছে কিন্তু একে একে ৩/৪ টি ঘর এরই মধ্যে পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে। মাছচাষী মোশারফ জানায়, আমি মুক্তার মিয়ার কাছে ৮ লক্ষ টাকা পায়, এজন্য পুকুরে মাছ চাষ করছি, কারো বাপের ক্ষমতা নাই আমাকে কিছু বলার।
ভূক্তভোগী গ্রামবাসীর বক্তব্য এটা এখন আর পুকুর নাই, সর্বনাশা নদীতে পরিণত হয়েছে। গত কিছুদিন আগে সরাইল উপজেলা শাখার উদীচী সভাপতি শরীফ উদ্দিনের বসত ঘরটি সম্পূর্ণ পুকুরে পড়ে গেছে। তিনি বলেন, আমার এ ঘরটি বাবা-মা-ভাই-বোনের স্মৃতি। ঘরটি পড়ে যাওয়ায় আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। পুকুরে মাছচাষীরা খুবই প্রভাবশালী এবং দস্যুপ্রকৃতির লোক, তাই উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর গ্রামবাসীদের নিয়ে আবেদন করেছি। তিনি যে ব্যবস্থা নিবেন তাতেই সন্তুষ্ট।

Powered by