বাংলাদেশ

সহকর্মীদের কাছে মুক্তিযুদ্ধে আমার ভূমিকা সম্পর্কে জানুন: ফখরুলকে মোজাম্মেল

  প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৬:১৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

মুক্তিযুদ্ধে তার (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী) ভূমিকার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবকে নিজ দলের সহকর্মীদের কাছ থেকে জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, আয়নায় নিজের চেহারা দেখে হয়তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তিযুদ্ধে আমার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে বুধবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মো. শাহজাহান কবিরের (বীরপ্রতীক) লেখা ‘অপারেশন জ্যাকপট’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিএনপির কাছে জিয়ার লাশের ছবি দেখাতে কিংবা চন্দ্রিমায় জিয়ার লাশ দাফনের প্রমাণে ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী।  চন্দ্রিমায় জিয়ার লাশ দাফন করা হয়নি বলেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।  এর জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার বলেন, উনি (মোজাম্মেল) নিজে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কিনা সেটা আগে প্রমাণ করুক।

ফখরুলের এমন মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘সব কথার তো জবাব দেওয়ার দরকার হয় না। মির্জা ফখরুল ইসলামের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আমার অধীনে যুদ্ধ করেছেন।  ওনাকে আমি জিজ্ঞেস করার জন্য বলব।  এছাড়া গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকার, ওনাদের কাছে জিজ্ঞেস করলে আমি খুশি হবো।’

তিনি বলেন, অনেকে বলে ওনার (মির্জা ফখরুল) পিতা কী করেছেন।  আমি ব্যক্তিগত বিষয়ে যেতে চাই না।  কী করেছেন, সেটা দেশের মানুষকে জিজ্ঞেস করুন।  উনি (মির্জা ফখরুল) যে চীনাপন্থী রাজনীতি করেছেন, যারা বলেছিল- আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ হচ্ছে দুই কুকুরের কামড়া-কামড়ি।  উনি সেই দলের সদস্য ছিলেন।  যদিও ওনার ভূমিকা কী ছিল আমার ব্যক্তিগতভাবে জানা নেই।  ওনারটা উনি যদি পরিষ্কার করেন। আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের চেহারাটা ভেসে ওঠে।  উনি বোধহয় ওনার চেহারাটা দেখে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, আমার ভূমিকা কী? যাক উনি জেনে নিতে পারেন সহকর্মীদের কাছ থেকে।

মোজাম্মেল হক বলেন, জিয়াউর রহমানকে যেদিন হত্যা করা হয়, তিনি যেভাবেই হোক রাষ্ট্রপতি তো ছিলেন।  একজন রাষ্ট্রপতির সবকিছু ধারণ করা হয়।  জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই।  কেউ কাউকে বেআইনিভাবে হত্যা করবে এটা সমর্থন যোগ্য নয়।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি, তার লাশ তারা ফেলে রাখে নাই, হত্যাকারীরা সেই লাশ গুম করেছিল, সেই লাশ পায়নি।  বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সেই লাশ পাওয়া গেছে, তো ছবি দেখান।  রাষ্ট্রপতি ছিল, যদু-মধু-রাম-শ্যাম তো ছিল না।  তার তো ডেডবডির একটা ছবি থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, বিএনপির মহাসচিব বলেছেন- তার পোস্টমর্টেম হয়েছে।  পোস্টমর্টেম হলে কোন হাসপাতালে হয়েছে।  কে করেছে…তিনি ডা. তোফায়েল সাহেবের নাম বলেছেন।  কোন হাসপাতালে হয়েছে…হাসপাতালে যদি নিয়ে গিয়ে থাকতে পারে তবে ছবি তোলা সম্ভব।  পোস্টমর্টেমের একটা ফরম্যাট আছে, সেই ফরম্যাটে আছে কি-না সেটা দেখান, প্রকাশ করেন।  একটা সাদা প্যাডে একজন লিখে দিলো, পোস্টমর্টেম আমি করেছি, ২২টি বুলেট পেল, কোনো ছবি নেই। তাকে গোসল করিয়েছে, কাফন পরিয়েছে কিন্তু কোনো ছবি নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, কফিনের উপর কাঁচ দিয়ে ঢাকা ছিল।  উনি কাঁচের মধ্য দিয়ে স্বচক্ষে লাশ দেখেছেন।  চোখ দিয়ে দেখলেন, ছবি তুলতে পারলেন না।  ছবি তোলার লোক আছে তো।  তা না হলে ডিএনএ টেস্ট করুন।

মন্ত্রী বলেন, ব্যক্তি জিয়ার সঙ্গে আমাদের বিরোধ নয়।  আমরা বলছি ইতিহাসের মিথ্যাচার নয়।  জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে, যে কোনোখানেই কবর দেওয়া হোক, মানুষ সম্মান জানাতে চায়, সে সম্মান জানাতে পারবে। কিন্তু তার লাশ যদি না থাকে সেটাকে যদি কবর বানিয়ে সম্মান দেখানো হয়, এটা হলো ইতিহাসের বিকৃতি। আমরা ইতিহাসের বিকৃতি বন্ধ করতে বলছি।

জিয়াকে হত্যার পর অল্প কিছু সময় চট্টগ্রাম হত্যাকারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে বিএনপি সরকারই প্রতিষ্ঠিত ছিল। তাই ছবি তোলার সুযোগ ছিল।

তিনি বলেন, সারা বাঙালি জাতি ১৯৭০ সালে ম্যান্ডেট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নেতা বানিয়েছে। আর কোথাকার কোন জিয়া, যার নাম জীবনে কেউ শোনেনি, সে একটা ঘোষণা (স্বাধীনতার ঘোষণা) পাঠ করেছে। তাও তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে, এর আগে আরও দু-জন পাঠ করেছে। তাকে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বানিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করেছে। ইতিহাস বিবৃতি তারা করেছে। এটা তাদের ধারাবাহিকতা।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by