প্রতিনিধি ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৬:৩৩:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
সাংবাদিকরা হলেন জাতির দর্পণ। তাদের দায়িত্ব জাতির ভালো-মন্দ শাসকদের কাছে তুলে ধরা। এই সাংবাদিকরা সব সময় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে থাকেন। অথচ তাদের উপর শাসকগোষ্ঠীর কালো থাবা লেগেই থাকে।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত নাগরিক মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নিহতের ঘটনার প্রতিবাদ, খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই মানববন্ধন করা হয়।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া বলেন, অশান্ত হয়ে ওঠা কোম্পানীগঞ্জে বিবাদমান দুই পক্ষের অপরাজনীতির নির্মম বলি হয়েছেন তরুণ সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। ওই ঘটনার সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, সাংবাদিক হত্যার ঘটনা আতঙ্কের, হত্যার পর বিচার না হওয়াটা উদ্বেগের। হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে রাষ্ট্রকে বের হয়ে আসতে হবে। নাহলে অবস্থার পরিবর্তন হবে না।
ন্যাপ মহাসচিব আরও বলেন, গত ১০ বছরেও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় নাই। খুনিদের শনাক্ত করতে পারে নাই রাষ্ট্র। সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে না পারলেও সাংবাদিক কাজল গুম হওয়ার পর তার গুমের রহস্য উদঘাটন না করে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে জেল খাটাতে পেরেছে। আর এই সকল কারণেই বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যার বিচার হবে বলে বিশ্বাস করতে পারছে না জনগণ।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, যারাই এই হত্যায় জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হলে কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে। সাংবাদিকের মৃত্যু নিয়ে, লাশ নিয়ে রাজনীতি চাই না।
তিনি বলেন, সরকারি দলের নেতাকর্মী বলে সাংবাদিক হত্যাকারীরা পার পেয়ে গেলে তার দৃষ্টান্ত শুভ হবে না দেশের জন্য। আর এই কারণেই কেউ রাজনীতি করতে না পারে সেই দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সকল সরকারের আমলেই সাংবাদিকদের ওপর দমন-নিপীড়ন চলে। যার কোনো বিচার পায় না ভুক্তভোগীদের পরিবার। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। সরকারের উচিত সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে বিশেষ আদালত গঠন করা।
গর্জো সভাপ্রধান সৈয়দ মঈনুজ্জামান লিটু বলেন, আমরা মুজাক্কিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার চাই। মানুষ আজ হাসে সাংবাদিক হত্যার বিচার না হওয়ার কারণে। তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে।
বিএসএএফ প্রধান সমন্বয়কারী মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, স্থানীয় মেয়র মির্জা কাদের, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, নিজাম হাজারীরা চেয়ারে থাকলে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যার সত্যিকার রহস্য উদঘাটিত হবে না। তাদেরকে অবিলম্বে দলীয় পদ, সংসদ সদস্য ও মেয়রের পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজু, সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. সামছুল আলম, রুরাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস এম জহিরুল ইসলাম, সংগঠনের মহাসচিব সাইফুল ইসলাম সেকুল, আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ.এম মনিরুজ্জামান, রাজনীতিক স্বপন কুমার সাহা, মো. শহীদুননবী ডাবলু, মো. কামাল ভুঁইয়া, সংগঠনের কুমিল্লা জেলা সভাপতি পারভেজ হোসেন বাবু, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম কাজল, চাঁদপুর জেলা নেতা ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় নেত্রী শাহনাজ মিনু, রাজনীতিক খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।