বাংলাদেশ

সারাদেশে নৈরাজ্য ছড়িয়ে দিতে অবরোধ ডেকেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২৩ , ৪:৪৪:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

সারাদেশে নৈরাজ্য ছড়িয়ে দিতে অবরোধ ডেকেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

সারাদেশে নৈরাজ্য ছড়িয়ে দিতে বিএনপি তিনদিনের অবরোধ ডেকেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু সপ্তম খণ্ড’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা স্পষ্টত নৈরাজ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তিনদিনের অবরোধ ডেকেছে। তাদের উদ্দেশ্যে অবরোধ করা নয়। তারা জানে তাদের পক্ষে দেশে অবরোধ কার্যকর করা সম্ভবপর নয়। কিন্তু তারা চোরগুপ্তা হামলা, নৈরাজ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তারা অবরোধ ডেকেছে।

‘আমরা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার। বাংলাদেশে চোর-ডাকাত ধরলে মানুষ চোর-ডাকাত ধরে তাদের ব্যবস্থা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। যারা মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে, সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেবে, ধ্বংস করবে তারা চোর-ডাকাতের চেয়েও খারাপ। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধেও জনগণ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে- বলেন আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই, রোববার তারা সারাদেশে হরতাল ডেকেছিল। সে হরতালকে সফল করার জন্য পুরনো আগুন সন্ত্রাসের খেলায় ফিরে গেছে বিএনপি-জামায়াত।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কীভাবে গাড়ি চালকদের হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাতেও ডেমরায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়েছে, সেই আগুনে বাস ও বাসের হেলপার পুড়ে গেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাদেশে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলাম। ঢাকায় কমপক্ষে দেড়-দুই লাখ মানুষের সমাবেশ হয়েছে। এত উসকানির মধ্যেও আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো উসকানিতে পা দেয়নি। তারা আমাদের নারী কর্মী থেকে শুরু করে অনেককে মারধর করেছে। নারীদের কাপড় ধরেও টানাটানি করেছে। দেড় কিলোমিটার দূরে এত তাণ্ডাব চালালো আমাদের নেতাকর্মীরা কিন্তু সেখানে যায়নি, আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম।

তিনি বলেন, লালমনিরহাটে আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তি মিছিল করছিল, সেখানে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে একজন শ্রমিক লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মোহাম্মদপুরে বাসে আগুন দিতে গিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপিকর্মী একটি ভবনে উঠেছিল, সেখান থেকে লাফ দিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে, বিএনপি বলে শহীদ হয়েছে। গাড়িতে আগুন দিতে গিয়ে ধাওয়া খেয়ে বিল্ডিংয়ে উঠেছিল, বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে মারা গেছে, একটা দুষ্কৃতিকারী মারা গেছে, বিএনপির ভাষায় শহীদ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত শনিবারের সহিংসতার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিন্দা জানিয়েছে, এটি আমরা মনে করি এ সহিংসতা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে এটিও বলা হয়েছে সহিংসতার ভিত্তিতে ভিসানীতি নিয়েও তারা ভাববে। যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, পুলিশ হত্যা করেছে, জনগণের সম্পত্তি পুড়িয়েছে, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে করে বিএনপির অবরোধ ঘোষণা নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতারা আসলে কত ভীতু। ২৮ অক্টোবর কর্মীরা যাওয়ার আগে নেতারা পালিয়ে গেছে। নেতারা পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীরাও পালিয়ে গেছে। আমরা বিরোধী দলে ছিলাম, সারা জীবন বিরোধীদলের কর্মী ছিলাম। আমরা রক্তাক্ত হয়েছি, পালিয়ে যাইনি। বিএনপি নেতাদের ভার্চুয়ালি অর্থাৎ সামনে আসতেই ভয় পায়, সেজন্য তারা ভার্চুয়ালি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে কি না, এ প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন আর রাজনৈতিক দলে নেই। বিএনপি এখন সন্ত্রাসী দলে, সন্ত্রাসী সংগঠনের চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে। যারা রাষ্ট্রের বেদিমূলে আঘাত হানে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালায় অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থার ওপর হামলা চালায়। যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয়, পুলিশ হত্যা করে তারা কখনো রাজনৈতিক দল হতে পারে না। বিএনপি এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা সন্ত্রাসী সংগঠনের চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে কারো সঙ্গে রাজনৈতিক দল হিসেবে আলোচনা করতে পারে। যারা গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিতে বিশ্বাস করে, যারা দেশের সংবিধান মানে, আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে মানে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে এক প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি তো বলেছিল খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে তাকে রক্ষা করা যাবে না। এখন আমেরিকা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি আগের তুলনায় অনেক ভালো আছেন। এজন্য আমিও স্বস্তি প্রকাশ করছি।

তিনি বলেন, সরকারই মার্কিন চিকিৎসকদের আসার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তাদের যে মতামত খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি খালেদা জিয়াকে রাজনীতির গুটি বানিয়েছে এবং তার স্বাস্থ্যকে নিয়ে রাজনীতি করেছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by