বাংলাদেশ

সাহিত্য চর্চা বাড়লে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দূর হবে: প্রধানমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৭:০৪:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা যত বাড়বে নতুন প্রজন্ম সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে তত দূরে থাকবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করাতে অনুবাদ সাহিত্যের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন তিনি মাসব্যাপী একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেন এবং ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে একুশে পদক তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম ১৯৪৮ সালে শুরু হয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকেরা আমাদের ওপর উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। বলা হয়েছিল, বাংলা ভাষাকে আরবি বা উর্দু হরফে লিখতে হবে। কিন্তু বাঙালি তা মানেনি।

বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষাকে তুলে ধরতে অনুবাদ সাহিত্যের ওপর জোর দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বিদেশিরা বাংলা ভাষা সম্পর্কে আরও জানতে পারুক, সেটাই আমি চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা সাহিত্যের যত বই বের হবে বিভিন্ন ভাষায় সেগুলো অনুবাদ হতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট করেছি। বাংলা একাডেমির সঙ্গে মিলে তারা এই উদ্যোগ নিতে পারে।

এ সময় তিনি বাংলা একাডেমিকে আন্তর্জাতিক সাহিত্য মেলার আয়োজন করার তাগিদ দেন।

বাংলা সাহিত্য চর্চায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। বইয়ের অডিও-ভিডিও ভার্সন করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, বিদেশে এ ধরনের অনেক লাইব্রেরি আছে। আমাদেরও সেভাবে করতে হবে।

তবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্যক্তিগতভাবে বইয়ে তিনি তৃপ্তিবোধ করেন, অন্য কোনো ডিভাইসে সেটা করেন না। যারা এসবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তাদের জন্য সেই ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পায়ে শিকল পরেছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আগের মতো স্বাধীনতা ভোগ করতে পারি না। বাংলা একাডেমি বইমেলায় এসে ঘুরঘুর করতে পারি না। তবু করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন পর আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

এ সময় তিনি নিজের ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি আর আমার বান্ধবী বেবী মওদুদ বাংলা একাডেমি লাইব্রেরিতে আসতাম। আমরা সারাদিন এখানে পড়ে থাকতাম।

অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পাদিত শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলি-১, কারাগারের রোজনামচা পাঠ বিশ্লেষণ, অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ বিশ্লেষণ ও আমার দেখা নয়াচীন পাঠ বিশ্লেষণ, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রচিত আমার জীবন নীতি, আমার রাজনীতি এবং জেলা সাহিত্য মেলা ২০২২ (১ম খণ্ড)।

অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মহাপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন।

এছাড়া, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ প্রাপ্ত ১৫ জন কবি, লেখক ও গবেষকের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by