প্রতিনিধি ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৫:৫৪:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যায় দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ তো নেননি, উল্টো সামরিক বাহিনীর কার্যকলাপে সাফাই গেয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত নেত্রী সু চি।
৬০ বছরের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন ছিল জান্তা সরকার। ১৯৮৯ থেকে ২০১০ দীর্ঘ ১৫ বছর অন্ধকার কারাগারে কাটাতে হয় অং সান সু চিকে। এরপরও ছিলেন দীর্ঘসময় গৃহবন্দি। ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে ক্ষমতায় এসে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হন গণতন্ত্রের এই বাতিঘর।
কিন্তু ২০১৭ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নির্যাতনের কারণে দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গাওয়ায় সু চির মুদ্রার আরেক পিঠ দেখতে সময় লাগেনি বিশ্ববাসীর। মূলত ২০১৯ সালে হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুনানিতে সামরিক বাহিনীর অভিযানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তার জনপ্রিয়তার মোড় ঘুরে যায়। শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে চলে যায় বিশ্ববাসী। এমনকি সু চির বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও হয়।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ বারবার অবগত করলে এ নিয়ে টালবাহানা করে আসছে সু চি সরকার। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সু চি কোনো পদক্ষেপই নেননি।
তার এক সময়ের বিদেশি সমর্থক বা বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে, তিনি ধর্ষণ, হত্যা এবং সম্ভাব্য গণহত্যা রুখতে কোনো পদক্ষেপ নেননি এবং ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীর নিন্দা কিংবা তাদের নৃশংসতার মাত্রাও স্বীকার করেননি। তার দেশের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
এমন বাস্তবতার মধ্যেই ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো নিরঙ্কুশ বিজয়লাভ করে সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি- এনএলডি। অপরদিকে নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সমর্থক রাজনৈতিক দল ইউএসডিপি (ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি) ভরাডুবি হয়।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে দেশটির সেনাবাহিনী। গত কয়েক দিন ধরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুঞ্জনের ডালপালা মেলে, সেনাবাহিনী সু চির সঙ্গে দর-কষাকষি করছিল, জেনারেল মিন অং কে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিতে। কিন্তু সু চি সেই আপসে যাননি। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সেনা অভ্যুত্থান। সেনাবাহিনীর হাতে আটক সু চির ভ্যবিষ্যৎ কী? এ নিয়ে প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে।