দেশজুড়ে

স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

  প্রতিনিধি ২৩ নভেম্বর ২০২৩ , ৫:০৮:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

সিলেটের গোয়াইনঘাটে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি হিফজুর রহমানকে (৩৬) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। 

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত হিফজুর রহমান সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ফুলেরতল বিন্নাকান্দি এলাকার আব্দুর রবের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়,পেশায় পান ব্যবসায়ী হিফজুর রহমান ঘটনার ১২ বছর আগে আলেমা বেগমকে বিয়ে করেন। তার তাদের তিন সন্তান রয়েছে। ঘটনার আগের দিন ২০২১ সালের ১৫ জুন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নগরের এয়ারপোর্ট থানাধীন আতাপীরের বাড়িতে যান। ফেরার সময় দ্বিতীয় ছেলে আহসানকে শ্বশুড় বাড়িতে রেখে আসেন। পরদিন ১৬ জুন ভোররাতে নিজ বসতঘরে স্ত্রী আলেমা বেগম, শিশু সন্তান মিজান ও মেয়ে আনিসাকে ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে খুন করেন হিফজুর রহমান। এরপর নিজেও আহত হওয়ার ভান করে মরদেহের মধ্যে পড়ে থাকেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ হিফজুরকে আটক করে। 

পরবর্তীতে নিহত আলেমা বেগমের বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হিফজুরকে মামলাটিতে গ্রেপ্তার দেখান তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিলীপ কান্ত নাথ। জিজ্ঞাসাবাদে হিফজুর রহমান স্ত্রী-সন্তানদের হত্যার কথা স্বীকার করেন। আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিতে আসামি জানান, ঘটনার আগের রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর স্বপ্নে দেখেন স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে বড় রুইমাছ ও কালো সাপ খেয়ে ফেলছে। তখন টিনের চালে দা দেখতে পেয়ে তা নিয়ে মাছ ও সাপ ইচ্ছেমতো এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকেন। পরে লাইট জ্বালিয়ে দেখেন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কেটে ফেলেছেন এবং রক্তে ঘর ভেসে যাচ্ছে। এই দেখে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে একমাত্র হিফজুরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক। একই বছরের ৭ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। মামলাটি অত্র আদালতে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হলে বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে দীর্ঘ শুনানিতে ৩১ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি মো. নিজাম উদ্দিন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ইলিয়াস হোসেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by