প্রতিনিধি ৪ নভেম্বর ২০২০ , ৪:০৯:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ
সোহরাব, বরগুনা সংবাদদাতা:
বরগুনার আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের অফদার পশ্চিম পাশে বঙ্গবন্ধু উদ্যান, শিশু পার্ক ,পিকনিক স্পট ,বাস্তবায়ন হলে সম্পূর্ণরূপে আমতলী আধুনিক মডেল পৌরসভায় রূপান্তিত হবে, এতে জেলার একটি ঐতিহ্য বহন করবে। উক্ত বিনোদন পার্ক করার দাবি জানান আমতলী পৌরবাসী। এ বিষয়ে বুধবার সকাল ১১টায় আমতলী পৌর সভা হল রুমে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন মেয়র মতিয়ার। তিনি বলেন আমতলী পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা নিচ্ছিত করার লক্ষ্যই সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছেন ।
তিনি বলেন মাদক,সন্ত্রাস, চাদাবাজ, ভূমিদস্যুদের কঠোর হস্থে দমন করা হবে। ওই কু-চক্রি মহলটি উন্নয়ন কাজে বাধা গ্রস্থ করছে এবং পৌরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্য কুচক্রী মহলটি মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে । তিনি ওই সমস্ত লোকদের প্রতিহত করার জন্য পৌর বাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। এবং জোর প্রতিবাদ জানান।
জানা যায় বরগুনা জেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে আমতলী পৌরসভা। ২৭টি গ্রাম ও ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ১৯৯৮ সালে পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারী মাসের ৪ তারিখে পৌরসভার প্রথম মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন জনাব মানিক চন্দ্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপর ১৯৯৯ সালের মে মাসের ৬ তারিখে জনগণের নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব আব্দুস ছত্তার মৃধা।
১৮ হাজার অধিক ভোটার অধ্যুষিত আমতলী পৌরসভার বর্তমান মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মতিয়ার রহমান। আগের দফায়ও তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণির ক্যাটাগরির পৌরসভা নিয়ে এর যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে এটি প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় পৌঁছে দিয়েছে।
আগামী দিনে এটিকে আরও উন্নত শ্রেণির পৌরসভায় পরিণত করার নিরলস চেষ্টা করছেন মেয়র মতিয়ার রহমান। টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে পৌর এলাকার রাস্তাঘাট, সেতু-কালভার্ট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তা আলোকিত করা, পয়ঃনিষ্কাশন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা, ৮০ ভাগ পৌরকর আদায়, ৯৭ ভাগ জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন করাসহ অনেক উন্নয়ন করা হয়েছে । পরপর দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নমূলক যে কাজ করেছে সেই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, এ কে স্কুল চৌমাথা থেকে বাধঘাট চৌমাথা পর্যন্ত ২২ ফিট প্রস্থ সড়ক করা হয়, বঙ্গবন্ধু সড়ক নামে।
পৌর শহরের নয়টি ওয়ার্ডের নত রাস্তা ট্রেনের ব্যবস্থা পয়েন্ট সেশন সুয়ারেজ ব্যবস্থা করা হয়। ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নত পাইপের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকূলীয় দুর্যোগ প্রবণ এলাকা তাই পৌরসভার থেকে ১৩ কোটি টাকা ব্যয় তিনটি সাইক্লোন শেল্টার করা হয়েছে যাতে যে কোনো ঘূর্ণিঝড়ে মানুষ দ্রুত আশ্রয় নিতে পারে এই সাইক্লোন শেল্টারে। চারটি আধুনিক পৌর মার্কেট করা হয়েছে এবং দুটি মিনি বাস টার্মিনাল।
পৌর শহরে স্থাপন করা হয়েছে এলইডি স্টিল লাইট, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। দেড় একর জমি পৌরসভার জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে ৮ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা ব্যয় দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন করা হয় ,যার সামনে ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয় বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বোউচ্চ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। পাঁচটি মডেল গণশৌচাগার করা হয়।
পৌরসভার আরো উন্নয়নের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্য বর্ধনে দুটি লেখ ফোয়ারা ওয়াক ওয়ে ব্রিজ , এটা বাস্তবায়ন হলে অনেক পর্যটক আসবে আমতলী পৌরসভায়।
মেয়র বলেন, ভোটের আগে সবাইকে নিয়ে শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে মিলেমিশে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমার মনে হয়, সেটা আমি করতে পেরেছি।
যারা আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য আসেন, তাদের সবার সঙ্গেই কথা বলার চেষ্টা করি। তবে পৌর পার্ক নির্মাণ, বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য জমি ক্রয়, শিক্ষার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখাসহ এই পৌরসভাকে মডেল পৌরসভায় পরিণত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তার অনেকটাই সম্ভবও হয়েছে। তিনি আরও বলেন দুর্নীতিমুক্ত পৌরসভা গড়ে তোলা নিয়ে মেয়র বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না। আমার পৌরসভার কেউ এসব কাজে জড়িত নেই। জলাবদ্ধতা এবং জমি দখল নিয়ে মেয়র বলেন, আমার পৌরসভায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে অকে কাজ হয়েছে। বরাদ্দ পেলে এই খাতে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
মেয়র বলেন, আমার পৌরসভায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক বেচাকেনার কোনো সুযোগ নেই। মাদকবিরোধী অভিযানের পর এসব অপরাধমূলক কাজ নেই বললেই চলে। আমার এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে আলোচনা সভা ও মতবিনিময় করা হচ্ছে।
গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থাও রয়েছে। এছাড়া এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রমও চালু রয়েছে। যতদিন পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করব ততদিন জনসাধারণের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাব। আমতলীতে কোন বিনোদন পার্ক না থাকার কারণে পৌরবাসীর দাবীকৃত বঙ্গবন্ধু উদ্যান, শিশু পার্ক ,পিকনিক স্পট ,বাস্তবায়নের কাজ হাতে নিয়েছেন জানালেন মেয়র মতিয়ার রহমান।