দেশজুড়ে

আজ ঐতিহাসিক ৩ মার্চ – বাগেরহাট পতাকা উত্তোলন দিবস

  প্রতিনিধি ৩ মার্চ ২০২৪ , ৪:০৬:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

আজ ঐতিহাসিক ৩ মার্চ - বাগেরহাট পতাকা উত্তোলন দিবস

১৯৭১ সালে বাগেরহাটের আকাশে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে স্বাধীনতার জানান দেয় যারা তাদের ভেতর অন্যতম নামটি ছিল ভন্টু মিয়া। কিন্তু আজ পর্যন্ত নাম লেখাতে পারেননি মুক্তিযোদ্ধার তালিকা।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ উত্তাল হয়ে ওঠে সারাদেশ তথা বাঙালি -বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নির্দেশে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ে নেতাকর্মীরা ১ মার্চ মধ্যরাতে,রাজপথ থেকে মেঠোপথের জনগণ ও আম জনতা সকলেই জেগে ওঠে । একযোগে ঢাকা সহ সারাদেশে শুরু হয় আন্দোলন বাড়তে থাকে আন্দোলনের তীব্রতা। তারই সূত্র ধরে বাগেরহাটের নেতাকর্মীরা ও সজাগ হয়, জ্বলে ওঠে ।

বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বাগেরহাটের মাওলানা উপাধিতে ভূষিত বাগেরহাটের সৈয়দ আবুল মনসুর আহমেদ শফিক ওরফে ভন্টু মিয়া ও শান্ত থাকতে পারলেন না , তিনিও ঢাকার রাজপথ অবরোধ সংগ্রামে যোগ দেন এবং প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন বাগেরহাটের আওয়ামী লীগ নেতা তখন ঢাকায় অবস্থান করছিলেন তার বাসায় চলে যান , প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন যিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলার ২ নং আসামি ছিলেন ।

প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন সাহেবের বাসা হতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত নকশার স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকার নকশা নেন এবং নিজ উদ্যোগে লাল সবুজ কাপড় কিনে বুকে বেঁধে নিয়ে লঞ্চ যোগে বাগেরহাট এসে পৌঁছান । ঐ সময় ঐ কাপড় ঢাকা হতে কিনতে হওয়ার পায়ে হেঁটে সদরঘাট আসেন বাংলা মায়ের অকুতোভয় দুঃসাহসী সন্তান ভন্টু মিয়া ।

২ মার্চ দুপুরে বাগেরহাট পৌঁছে সকলের সাথে যোগাযোগ করে বিকেল তিনটায় পিসি কলেজ মাঠে জড়ো করে, বিশাল এক মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন নেতৃত্ব দিয়ে এবং তৎকালীন পি এম জির মাঠ বর্তমান স্বাধীনতা উদ্যানে সকলে জড়ো হন । তারপর মধ্যরাত মানে বারোটার কিছু আগে বাগেরহাট নজরুল ইসলাম রোডের আনসার দর্জিকে দিয়ে স্বাধীন বাংলার বাগেরহাটের প্রথম পতাকা তৈরি করান ।

হাজার হাজার জনতার উপস্থিতিতে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন সকলে মিলে এবং স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ান । এস ডি ও বিল্ডিং এ পতাকাটি টানাতে সর্বকনিষ্ঠ কিশোর চিত্তরঞ্জন মহোদয়কে নির্বাচন করা হয় এবং তাকে সহায়তা করেন আরেক অকুতোভয়ী কিশোর আব্দুল মান্নান পাঠান । মসাইদ ইব্রাহিম হোসেন , লতিফ খন্দকার , আনোয়ার সরদার , মানিক সাহা সহ অনেক সহযোদ্ধা ছিলেন তার যুদ্ধকালীন সকল কর্মের সাথে পাশাপাশি ।

এসব তথ্য জানান তার কন্যা গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ বাগেরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কবি সৈয়দা তৈফুন নাহার। তিনি আরো জানান তৎকালীন সময়ের শেখ আবদুর রহমান ( এম পি ) , ডা. আব্দুর রাজ্জাক, বারিক শিকদার , অশোক দেবনাথ , ঋষিকেশ দাস মোল্লা নজরুল ইসলাম , শেখ আঃ মান্নান , শেখ আঃ হান্নান, মান্নান পাঠান সহ অসংখ্য দেশপ্রেমিক লোকজনের উপস্থিত থাকলেও পতাকা উত্তোলন ও পাকিস্তানি পতাকায় অগ্নিসংযোগ এর কারণে এম পি শেখ আবদুর রহমান এর সাথে ভন্টু মিয়া ও আতাহার ডাক্তারের নামে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা ও হুলিয়া জারি হয় ।

ভন্টু মিয়া খুলনা জেলা কমিটির ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট আজিজ মিয়ার সভাপতিত্বে গঠিত কমিটির একজন ভোটার সদস্য ছিল এবং পরে বাগেরহাট থানা কমিটির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন ৷ ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচন সহ ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এর সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদান করতেন ।

পরবর্তীতে যুদ্ধকালীন সময় ভারত থেকে যে তথ্য আদানের সময় সাতক্ষীরা জেলার তালা নামক স্থানে পাক আর্মিদের হাতে ধরা পড়েন এবং যশোর জেলে অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হন । তবে আজ পর্যন্ত তার পিতা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি তাই যাতে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন সেজন্য মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by