আইন-আদালত

আবারো রিমান্ডে মামুনুল

  প্রতিনিধি ২৬ এপ্রিল ২০২১ , ৫:১৫:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে ফের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ফের ৭ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসির আহসান চৌধুরী তা মঞ্জুর করেন।

মোহাম্মদপুর থানার নাশকতার মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে মামুনুল হককে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্ত্বরে সহিংসতার ঘটনায় মতিঝিল থানার একটি মামলা ও চলতি বছরের মার্চে বায়তুল মোকারমের সামনে সহিংসতার ঘটনায় পল্টন থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে পল্টন থানার মামলায় চার দিন ও মতিঝিল থানার মামলায় তিন দিন করে মোট ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আজ রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউট আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুর ও জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন।

গত ১৮ এপ্রিল বেলা ১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে। গ্রেপ্তারের পর মোহাম্মদপুর কলেজ রোডের তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয় তাকে। এ বিষয়ে নিজ কার্যালয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানায় একটি নাশকতা মামলা হয়। মামলা তদন্তে ওই ঘটনায় সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে (মামুনুল হক) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া হেফাজতের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, ভাঙচুরসহ অনেক মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে আলোচনায় আসেন মামুনুল হক। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ডিসেম্বরে কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। ভাস্কর্য বিরোধিতা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। এর মধ্যে আবার গত মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় সংঘাত-নাশকতার ঘটনায় মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে গত ৩ এপ্রিল এক নারীসহ অবরুদ্ধ হয়ে আবারও আলোচনায় আসেন মামুনুল হক। যদিও ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন হেফাজতের এই নেতা।

এ পর্যন্ত সংগঠনটির অন্তত আটজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে গত শনিবার রাতে বারিধারা মাদ্রাসা থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিবকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই দিন দুপুরে গ্রেপ্তার হন কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল বিকালে লালবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজত নেতা জুবায়ের আহমেদকে। গত ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় লালবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত হোসেন। গত ১৩ এপ্রিল রাতে যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফউল্লাহ্কে। গত ১১ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয় চট্টগ্রাম থেকে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে সহিংসতার ঘটনার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by