চট্টগ্রাম

ঈদ সামনে রেখে চাঁদপুরে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের সেমাই

  প্রতিনিধি ২৭ এপ্রিল ২০২১ , ৫:৪০:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

মাহফুজুর রহমান, চাঁদপুর:

পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বিএসটিআই’র মান সনদ (সিএম লাইসেন্স) ছাড়াই চাঁদপুরে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে সেমাই তৈরি এবং গুদামজাত করা হচ্ছে।

বানিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারে প্রতিবছরের মতো এবারও বেশ কয়েকটি কারখানায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে নিম্নমানের সেমাই। অস্বাস্থ্যকর ও মানহীন এসব সেমাই পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোয় বিক্রি করা হয়।

প্রতিদিন চাঁদপুরে বিভিন্ন কারখানায় তৈরি হচ্ছে প্রায় ৫০ মণ সেমাই। ঈদ উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব সেমাই কারখানার কারিগররা। ঘর্মাক্ত শরীর ও কোনো প্রকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছাড়াই কারিগররা সেমাই তৈরি করছেন। এছাড়া নিম্নমানের ময়দা দিয়ে তৈরি করা এসব সেমাই ভাজা হচ্ছে দীর্ঘদিন ব্যবহƒত পাম অয়েল দিয়ে। কোনো ঢাকনা ছাড়া স্তূপ করে এসব রাখা হচ্ছে খোলা স্থানে। এসব সেমাই খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ।

পুরানবাজারের বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বিল্লাল খানের হাজী বেকারি, নিতাইগঞ্জ রোডের মিম বেকারি, আলম বেকারি, রয়েজ রোডের কমিউনিটি সেন্টারের সামনে মুনছুরের সেমাই কারখানা এবং মেরকাটিজ রোডের জাহাঙ্গীর খানের সেমাই কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের সেমাই। এসব বেকারির শ্রমিকরা কোনো স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দিন ও রাতে সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শ্রমিকদের কাছে সুরক্ষা সামগ্রী হিসেবে গ্লাভস, মুখে মাস্ক ও পায়ে প্লাস্টিক গামবুট থাকার কথা থাকলেও তা চোখে পড়েনি। আর এসব উৎপাদিত সেমাই চাঁদপুর জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোয় বাজারজাত করা হচ্ছে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাইসহ যেসব খাবার উৎপাদন করা হয়, সেগুলো বর্জন করা এখন সময়ের দাবি। কারণ এসব কারখানায় পোড়া তেলসহ নিম্নমানের উৎপাদন সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক আলসার, আমাশয়, পাতলা পায়খানাসহ ক্যানসারও হতে পারে।

প্রশাসনের তরফে জানা গেছে, পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন স্থান নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর ও জেলা মার্কেটিং অফিস যৌথভাবে কাজ করছে। পুরানবাজারের সেমাই তৈরির কারখানায় প্রতিবছর অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। বিল্লাল খানের হাজী বেকারিকে এর আগেও মোবাইল কোর্টে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। এসব কারখানায় শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে জানান তারা।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা করোনাকালেও মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। পুরানবাজারের সেমাই কারখানায় প্রতিবছর অভিযান চালানো হয়। এ বছরও যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by