দেশজুড়ে

এসআই আকবরকে প্রয়োজন, সব ইমিগ্রেশনে চিঠি দিয়েছে পিবিআই

  প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২০ , ৩:৩০:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ অনলাইন:

সিলেট কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে মো. রায়হান আহমদের (৩৪) মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কাজ শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তের স্বার্থে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সংস্থাটি বলছে, আকবর যেন কোনোমতেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে। এ কারণে সব ইমিগ্রেশনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সীমান্তের বিভিন্ন ইমিগ্রেশন সেন্টারে জানানো হয়েছে। তাকে ধরার জন্য আমরা টিম রেডি করেছি, তাকে আমাদের খুবই প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত পিবিআই’র প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির  প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সিলেটের ঘটনার ডকেট আমরা গত পরশুদিন রাতে পেয়েছি। ঘটনাস্থলে সিলেটের পিবিআই টিম তিন থেকে চার ঘণ্টা ছিল গতকাল। আমরা তদন্ত শুরু করে দিয়েছি, তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে মনে হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপপরিদর্শক আকবরকে আমাদের প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আইজিপি স্যার সব সময় বলেন, করোনার মধ্যে তোমরা যে সুনাম কামিয়েছো। এ সুনাম নষ্ট করো না। আকবর যেহেতু এই অপকর্ম করে বাহিনীর সুনাম নষ্ট করেছে এবং আমাদের কথা চিন্তা করেনি। সুতরাং তার বিষয়ে আমাদেরও কোনও চিন্তা করার সুযোগ নেই।’

১০ হাজার টাকার কারণেই কি এ ঘটনা ঘটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন,  ‘আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছি। একদিনে তো সব কিছু বলা যাবে না। তবে আমরা একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মরদেহ আবার উঠাবো এবং তদন্ত করবো।’অন্যদিকে ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও মামলার ফাইল পায়নি। পেলে তদন্ত কাজ শুরু করবো। এ ক্ষেত্রে তদন্তভার সিনিয়র কোনও অফিসারকে দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, রায়হান নামের ওই যুবককে বন্দরবাজার থানা পুলিশ গত শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকালে আটক করে। ওইদিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় রায়হানের বাবা। তাতে ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকালে এলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও ওপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনও প্রমাণ মেলেনি। রবিবার সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেলে ৩টার দিকে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। রায়হানকে পুলিশ হেফাজতে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনাটি রবিবার থেকেই গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। সোমবার এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলা দায়েরের পর এর তদন্তভার দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by