দেশে করোনা রোগীদের জন্যে ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে বিনামূল্যে করোনার চিকিৎসা দেওয়া ও সবার জন্যে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন নয়টি বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ’র ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা।

তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তুকি দিয়ে সব শিক্ষার্থীর বেতন-ফি মওকুফ করা এবং শ্রমজীবী জনগণের জন্য খাদ্য ও কর্মসংসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়া।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ-মার্কসবাদী) সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন, ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক আবদুল মোমিন, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকারসহ প্রমুখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে নেতারা তাদের তিন দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, করোনাকালে সরকার মানুষের দায়িত্ব না নিয়ে উল্টো তাদেরই দোষারোপ করছে। তারা বলছেন, ‘মানুষ সচেতন নয়, স্বাস্থবিধি মেনে চলে না।’ অথচ মানুষ যথেষ্ট সচেতন। কিন্তু ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে কতক্ষণ সচেতন থাকা যায়? এই এক বছরে কী চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন আপনারা? ৩১ কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত করোনা হাসপাতাল কোথায়? তারা বলেন, ‌‌‘মানুষের কথা চিন্তা না করে করোনা ঠেকানোর জন্যে আবার লকডাউন দেওয়া হচ্ছে।’ সরকারকে জনগণের খাদ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিত করে জনবান্ধব লকডাউন দিতে হবে। নইলে ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ আত্মহত্যা করবে।

করোনাকালে শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, এই করোনাকালে অনলাইন ক্লাসে ডিভাইসের কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হতে পারেনি। অন্যদিকে, এই মহামারীর মধ্যে তাদের কাছ থেকে বেতন-ফি আদায় করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে না পড়ে, সেজন্য তাদের সকল বেতন-ফি মওকুফ করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তুকি দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাসুদ রানা বলেন, করোনাকালে দেশে ৭৯টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করার কথা থাকলেও মাত্র ৩৮টি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এগুলো সরকারের অবহেলা। এই লকডাউনে সাড়ে পাঁচ কোটি শ্রমিক ও বেসরকারি চাকরীজীবী খাদ্য সংকটে পড়বে। সরকারকে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফ করতে হবে। জনগণের জন্যে ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে বিনামূল্যে করোনার চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে হবে।