দেশজুড়ে

ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় প্রমাণ করেছে সরকার

  প্রতিনিধি ২০ মার্চ ২০২৪ , ৩:১৬:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় প্রমাণ করেছে সরকার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে সদ্য পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পাওয়া মো. মিহাদ খাঁন অর্পণের মমতাময়ী মা মোছা. শামীমা আক্তার বলেন, আমরা যেমন ঘুষ না দিয়ে চাকরি হয়েছে,অবশ্যই বলবো ঘুষ ছাড়া চাকরি হয়, মানুষ বিশ্বাস করবে না তার পরেও বলবো এইবার সরকার প্রমাণ করেছে ঘুষ ছাড়া চাকরি হয়।

আলহামদুলিল্লাহ,আমার ছেলে নিজ যোগ্যতায় ১২০ টাকায় চাকরি পেয়েছে। শামিমা আক্তার বলেন, আমার ছেলে মিহাদ যখন জানতে পেরেছে পুলিশে কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তখন সে অ্যাপ্লাই করেছে। যখন সময় হয়েছে তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইনে গেছে, ইন্টারভিউ দিয়েছে, যা যা করার করছে।

আল্লাহর রহমতে নিজ যোগ্যতায় সে চাকরি পেয়েছে। আর সে সময় মিহাদের মায়ের চোখ থেকে খসে পড়ে জল,আর কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার পরিবারের হাল ধরার মতো কেউ ছিল না,আমার ছেলেই ছিল, তার চাকরি হওয়ায় আমি অনেক খুশি। জানা যায়,মিহাদের বাবা মো. আব্দুস সালাম পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। তিনি আখাউড়া পৌরশহরের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা। চাকরি জীবনে চট্টগ্রামে সরকারি কোয়ার্টারে থেকে কোন রকমে দুই সন্তানের পরাশুনার খরচ চালিয়েছেন।

বড় ছেলে মিহাদ সিএমপি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করে এবং ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র হিসেবে অধ্যয়ন করছিল। সেসময় তাদের পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার। হঠাৎ করে গত বছরের ২৩ অক্টোবর মিহাদের বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে তাদের পরিবারে উপার্জনক্ষম কোনো লোক না থাকায় কষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয়। মিহাদের বাবার মৃত্যুর পর তার জমানো কিছু টাকা ছিল। সেই টাকা দিয়ে কিছুদিন জীবন যাপন করে।

পরবর্তীতে তার বাবার রেখে যাওয়া একটি বাইক বিক্রি করে সংসারের খরচ চালান। তার পরে আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত দিনপাত করেছেন। সদ্য পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের পর মো. মিহাদ খাঁন অর্পণ বলেন, সে সরকারি কোয়ার্টারে থেকে পড়াশোনা করেছেন। সেখানে ডক্টর মাজহারুল হক হাই স্কুলে ২০২১ সালে এসএসসি পাস করেছে। পরে সিএমপি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

তার পরেই মিহাদের বাবার মৃত্যুতে তাদের পরিবারে নেমে আসে কষ্টের সময়। তার বাবার কিছু জমানো টাকা শুরুতে শেষ হয়ে যায়, তার শখের বাইকটি বিক্রি করতে হয়েছে সংসার চালাতে গিয়ে ,সব শেষে আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় কোন রকমে সংসার চালিয়েছেন মিহাদ। চলতি বছরের শুরুতে কনস্টেবল নিয়োগের সার্কুলার দেখে আবেদন করে মিহাদ পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইনে ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ইন্টারভিউ দিয়ে সফলভাবে উত্তীর্ণ হন।

পরে লিখিত পরীক্ষায় জন্য ০৬ মার্চ গ্যাস ফিল্ড স্কুল এন্ড কলেজে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেখানেও সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় ২৮৯ জন উত্তীর্ণ হয়। তাদের মধ্যে ভাইভা পরিক্ষায় ৭১ জন চূড়ান্ত ফলাফলে নিয়োগ পেয়েছেন। মিহাদ আরও বলেন, চাকরির আবেদনের জন্য কম্পিউটার দোকানে ৪০ টাকা দিয়েছি।

পরে লিখিত পরীক্ষার পূর্বে সরকারি ফি ১২০ টাকা দিয়েছি, এছাড়া আর কোন টাকা দিতে হয়নি। চাকরি পেয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক খুশি, পরিবারের হাল ধরতে পেরেছি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by