দেশজুড়ে

চারঘাটে কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি ভেজাল গুড় বাজারে

  প্রতিনিধি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৯:০৭:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ময়েন উদ্দিন পিন্টু, চারঘাট (রাজশাহী) : রাজশাহীর চারঘাটে আখ ও খেজুরের ভেজাল গুড় তৈরি হচ্ছে এবং উৎপাদিত এই ভেজালগুড় বিক্রয় হচ্ছে স্থানীয় বাজারসহ ও দেশের বিভিন্ন হাটবাজারগুলোতে। সাধারণত শীতকালে আখ ও খেজুরের গুড় উৎপাদন হয়। শীতকালে কৃষকরা কৃষি কাজের পাশাপাশি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে খেজুর গুড় উৎপাদন করে। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসন ও খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তার নিরাবতার সুযোগ নিয়ে নিষিদ্ধ আখ মাড়াই কল ও কেমিক্যালযুক্ত উপাদান দিয়ে গুড় তৈরি করছে উপজেলার অসাধু ব্যবসায়ী চক্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আখের গুড় তৈরিতে ব্যবহার করছে সুগারমিলের পরিত্যক্ত গো খাদ্য চিটাগুড়, চিনি, হাজার পাওয়ারের রং ও আটা। খেজুর গুড় তৈরিতে গাছিরা ব্যবহার করছে রসের পাশাপাশি চিনি, রং এবং আটা। সাধারনত অধিক লাভ ও ওজন বৃদ্ধির জন্য গুড় উৎপাদনকারীরা এ সকল ক্ষতিকর গো-খাদ্যসহ বিভিন্ন কেমিক্যালগুলো ব্যবহার করছে। এ প্রসঙ্গে মেডিকেল অফিসার আতিকুল হক রতন বলেন ক্ষতিকর গোখাদ্য ও কেমিকেল ব্যবহারে উৎপাদিত গুড় খেলে মানব শরীরে পেটের বিভিন্ন রোগ ছাড়াও ক্যানসারের মতো ভয়ানক রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলার ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়নের বুদিরহাট গ্রাম, ডাকরা ও বাকরা, চারঘাট ইউনিয়নের পরানপুর, গওরা, কাকঁড়ামারী, মেরামতপুর দিড়িপাড়া, নিমপাড়া ইউনিয়নের নন্দনগাছি, কালুহাটি, শলুয়ার জাগিরপাড়া, হলিদাগাছি, মাড়িয়া, বামদিঘী, ইউসুফপুরের বাদুড়িয়া, টাঙ্গন, সরদহ ইউনিয়নের ঝিকরা, খোর্দ্দগবিন্দপুর, চারঘাট পৌরসভার মোক্তারপুর, মিয়াপুরে আখ ও খেজুরের গুড় তৈরি হয়। এ সকল এলাকায় সরকারীভাবে নিষিদ্ধ আখ মাড়াই কল দিয়ে আখের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছেন। এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের জন্য সামান্য পরিমান আখের রসের মধ্যে গো-খাদ্যে ব্যবহৃত চিটাগুড়, হাইড্রোজ, রং ও চিনি ব্যবহার করে তৈরি করছেন ভেজাল আখের গুড়। এছাড়াও খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যবহার করছেন চিনি, আটা, হাইড্রোজ ও কেমিক্যাল রং। এলাকাবাসীরা জানান এ সকল ভেজাল আখ ও খেজুর গুড় স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে বাজারজাত করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য স্যানিটারি পরিদর্শক আফজাল হোসেন বলেন প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা লোকমান হোসেন কে সঙ্গে নিয়ে মেরামতপুর ও মিয়াপুরের কয়েকটি গুড় তৈরির কারখান পরিদর্শন করেন। সংগ্রহকৃত স্যাম্পল পরিক্ষা শেষে মাত্রাতিরিক্ত কেমিক্যাল পাওয়া গেছে। জেলা নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর সাথে যৌথভাবে খুব দ্রæত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় নি, তবে অভিযোগ পেলে দ্রুত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by