বরিশাল

জমে উঠেছে ঝালকাঠির ভাসমান পেয়ারা মার্কেট

  প্রতিনিধি ১২ আগস্ট ২০২০ , ৭:৩৩:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠি জেলার ভিমরুলি আর পিরোজপুর জেলার আটঘর-কুড়িয়ানা এলাকাজুড়ে রয়েছে দেশের তথা এশিয়ার বৃহত্তম পেয়ারা বাগান। থাইল্যান্ডের ফ্লোটিং মার্কেট দেখতে না পেরে যারা আফসোস করেন তারা ভিমরুলি, আটঘর-কুড়িয়ানার ভাসমান বাজারে ঘুরে আসতে পারেন। খালের মোহনায় হওয়ায় তিনদিক থেকে নৌকা আসে এখানে। এ বছর পেয়ারার মৌসুমে জমে উঠেছে ঝালকাঠির সীমান্তের ভীমরুলী-আটঘর- কুড়িয়ানার ভাসমান পেয়ারার হাট। এ বছর পেয়ারার বাজার মূল্য কিছুটা মন্দা হলেও ক্রেতা বিক্রেতা তেমন কমেনি। তবে কমেছে পর্যটকদের ভীড়। কারণ হিসেবে করোনাকে দায়ী করেছেন পেয়ারা ব্যবসায়ীরা। পেয়ারা ব্যবসায়ী রনি হালদার জানান, এ বছর পেয়ারার দাম কম। করোনা ভাইরাসের কারণে কেউই ঝুঁকি নিয়ে বাগান কিনতে চাচ্ছে না। ক্রেতা বিক্রেতা সকলেরই মধ্যে একটা আতংক বিরাজ করছে। তারপরও প্রতিদিন পেয়ারার বিপণন ও ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ভীমরুলীর, আটঘর কুড়িয়ানার ভাসমান বাজারে পেয়ারা চাষি ও পাইকারদের ভিড় ক্রমেই জমে ওঠে। স্থানীয় ও বিভিন্ন অ ল থেকে বিশেষ করে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, নোয়াখালী ও ফরিদপুর থেকে আসা বেপারীরা নৌকা থেকেই পেয়ারা কিনে ট্রলার অথবা ট্রাকে করে তাদের গন্তব্যে নিয়ে ভোক্তার নিকট পৌছে দেন। ভরপুর এ বাজার দুপুরের মধ্যেই শুন্য হয়ে যায়। এই অ লে মুকুন্দপুরী, লতা ও পুর্নমন্ডল জাতের পেয়ারা উৎপাদন হয়। এই পেয়ারা খেতে মিষ্টি ও অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হয়ে থাকে। আটঘর, শতদশকাঠি, কাফুরকাঠি, ভীমরুলি, জিন্দাকাঠি, ডুমরিয়া, খাজুরিয়া, বাউকাঠি, বেতরা, হিমানন্দকাঠি, পোষন্ডা, রমজানকাঠি, সাওরাকাঠি, কাচাবালিয়া গ্রামে প্রচুর পরিমানে পেয়ারা উৎপাদন হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ভীমরুলি, আটঘর- কুড়িয়ানা বাজারের গিয়ে দেখা যায়, পাকা পেয়ারার প্রতি মণ (৪০কেজি) ২৫০ টাকা, আধা পাঁকা ৩০০টাকা এবং শুধু কাঁচা ৩৫০ টাকা দরে চাষীরা পাইকারী বিক্রি করছে। এখন শ্রাবণ মাস তাই ঝালকাঠির ব্রান্ডিং পণ্য পেয়ারার ভরা মৌসুম। ঝালকাঠির ১২টি গ্রামের প্রায় ১০০০ হেক্টর জুড়ে এই অ লের প্রধান অর্থকারী ফসল হিসেবে শতবর্ষ জুড়ে পেয়ারা চাষ হচ্ছে। প্রতিদিন পেয়ারা চাষিরা খুব ভোরে পেয়ারা বাগান থেকে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে ৩-১০ মন করে পেয়ারা এই হাটে এনে নৌকায় বসেই বিক্রি করেন। এ বিষয়ে ঝালকাঠির রমজানকাঠি কারিগরি ও কৃষি কলেজের বিভাগীয় প্রধান (কৃষি) কৃষিবিদ ড. চিত্ত রঞ্জন সরকার বলেন, পেয়ারা চাষ খুব লাভজনক হয়ে উঠছে। হালকা বেলে ও দো- আঁশ মাটিতে পেয়ারা ভাল হয়। ইহা বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার করা সহজ। এছাড়াও কলম দ্বারাও খুব সহজে বংশ বিস্তার করা যায়। পেয়ারা অ্যানথ্রাকনোজ নামক রোগে আক্রমণ করে। এতে ফল ও পাতায় দাগ পড়ে। এ রোগ দমনের জন্য সপ্তাহ পর পর কম্পেনিয়ন ২ গ্রাম পানি স্প্রে করতে হবে। এ বছর বৃষ্টির কারণে পেয়ারা বাজারে আসতে ১৫ দিন সময় বেশি লেগেছে। প্রায় ২০০ বছর ধরে এ অ লে মাটি কেটে কান্দি বানিয়ে স্বজন পদ্ধতিতে পেয়ারার চাষ হয়ে আসছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by