প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবর ২০২০ , ৬:৫৭:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
মজিবুর রহমান, কেন্দুয়া : নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় জলাবদ্ধতার কারনে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বনবিভাগের কার্যক্রম। গুরুত্বপূণ ওই কার্যালয়টি কোন হাওরের আশে-পাশে নয়, উপজেলা পরিষদ বাউন্ডারি ভেতরেই এর অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে দপ্তরটির অচলাবস্থা যেন দেখার কেউ নেই। সুত্র জানায়, কৃষি বিভাগের প্রকল্প হিসেবে কেন্দুয়ায় বন বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে তা রাজস্ব খাতে ন্যাস্ত হয়। যাত্রা শুরু থেকেই যেন কার্যালয়টি অবহেলার শিকার। কেন্দুয়া উপজেলার অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কার্যালয় পরিপাটি ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হলেও বন বিভাগ কার্যালয়টি খোঁজ কেউ নেন না। সম্প্রতি সময়ে বন বিভাগের কার্যালয় হিসেবে ছোট একটি আদাপাকা ঘর নির্মাণ করা হলেও কার্যক্রম না থাকায় ঐ এলাকায় ভূতুরে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। চারাগাছ উৎপাদন হওয়ার স্থানে এখন কচুরিপানা ও জলজ উদ্ভিদ জন্মে। খেলা করে জলজ প্রাণী। কার্যালয়টিতে কখনো গটা ও হাটু পানি মাড়িয়ে ঢুকতে হয়। দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মাঝে মাঝে দাপ্তরিক কাজে কেন্দুয়ায় এলেও যান না তার কার্যালয়ে। উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের পর থেকে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় বাগান মালী ইদ্রিস মিয়া। বন বিভাগের ওই কার্যালয়টিতে একজন মাত্র বন মালী কর্মরত রয়েছেন। তিনি সামলান সব কিছু। দীর্ঘদিন ধরে পদ শূন্য উপজেলা বন কর্মকর্তার পদটি। কেন্দুয়া বন বিভাগ কার্যালয়টির নান্দাইলের সামাজিক বনায়ন নাসারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধীনে পরিচালিত হয়। উপজেলা বন কর্মকর্তা পদ শূন্য থাকায় নান্দাইল সামাজিক বনায়ন নাসারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিবাংকর রায় দ্বায়িত্ব পালন করছেন। ওই কার্যালয়টি বেহালাবস্থা জানার জন্যে লাগাতার কয়েকদিন ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। অপেক্ষার পর গত মঙ্গলবার দেখা মেলে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে। খুব ব্যস্ত ওই কর্মকর্তা যেন কথা বলার সুযোগ নেই। কখন কিভাবে এবং কেমন চলছে কার্যক্রম যা বলছেন সব কিছুই অনুমান নির্ভর। এক সময় বন বিভাগের কেন্দুয়া কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে চারা বীজ উৎপাদন, চারা আবর্তন, বাগান কর্তন, বিভিন্ন উৎপাদিত চারা বিক্রির কাজ হতো। বর্তমানে এর কিছুই হয় না। যা হয় সবই কাগজে কলমে। বাগান মালি ইদ্রিস মিয়া জানান, উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের পর থেকে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আর এবছর ৩০ হাজার চারা নান্দাইল অফিসে উৎপাদন করা হয়েছে। নান্দাইল সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিবাংকর রায় বলেন, কৃষি বিভাগের প্রকল্প হিসেবে কেন্দুয়ায় বন বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০০৪/০৫ সালে রাজস্ব খাতে ন্যাস্ত হয়। এক সময় এখানে ভাল চারা উৎপাদন হতো এবং তা স্বল্পমূল্যে বিক্রয় করা হতো। জলাবদ্ধতার কারনে এখন আর তা সম্ভব হয় না। জলাবদ্ধতা কারনে এখন তো অফিসেই যেতে পারিনা। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম জানান, পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি আমরা একটি পরিকল্পনা করেছি। করোনার কারনে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আমাদের পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা হলে এ সমস্যা থাকবে না।