রংপুর

জীবিতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন সেই মৃত নারী

  প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ৩:১১:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পন ডেস্ক:

অবশেষে দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার সহিদা বেগমকে (৮৪) জীবিতের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৪ মাস আগে তাকে নির্বাচন কমিশনের তালিকায় মৃত দেখানো হয়েছিল। এ নিয়ে গত ১৭ এপ্রিল সংবাদ প্রকাশের পর জীবিতের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সংবাদে প্রকাশ হয়, এক যুগ আগে মারা যাওয়া স্বামীর অবসর ভাতায় সংসার চলছিল সহিদা বেগমের। কিন্তু তাকে মৃত দেখানোয় গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে (১৪ মাস) স্বামীর অবসরভাতা উত্তোলন করতে পারছেন না তিনি। পাচ্ছেন না নাগরিক অন্যান্য সুবিধাও।

সহিদা বেগম দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের  মৃত ফজির উদ্দিন ইসাহাকের স্ত্রী। সংবাদে আরও প্রকাশ হয়, সহিদা বেগমের স্বামী ফজির উদ্দিন ইসাহাক ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। তার মৃত্যুর পর অবসরভাতার টাকা দিয়ে সহিদা একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। আগে তিনি পাস বইয়ের মাধ্যমে টাকা তুলতেন। গত বছরে পাস বইয়ের স্থলে ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলনের নিয়ম শুরু হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকে গিয়ে টাকা গ্রহণের সময় সহিদা বেগমকে জানানো হয়, তিনি টাকা পাবেন না। কারণ নির্বাচন কমিশন থেকে তাকে মৃত দেখাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের এমন গাফিলাতির কারণে গত ১৪ মাস ধরে তিনি কোনো টাকা তুলতে পারেননি। এরই মধ্যে তিনি বেশ কয়েকবার নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেছেন।

নাম সংশোধনের জন্য আবেদনপত্র, চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, পাস বই, ব্যাংকের চেক বইসহ যাবতীয় কাগজপত্রাদি নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। এরপরও সংশোধিত হয়নি নাম। মৃত থেকে জীবিত হতে পারেননি তিনি।

সহিদা বেগম ১৪ মাস ধরে জীবিত হওয়ার চেষ্টায় ঘুরছেন প্রশাসনের দ্বারে। এমন সংবাদ গত ১৭ এপ্রিল দৈনিক  ভোরের দর্পন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপরই টনক নড়ে নির্বাচন কমিশনের। অবশেষে তাকে ভোটার আইডি কার্ডে জীবিত হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মালেক জানান, সহিদা বেগমের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় একটি ভুলের কারণে এ সমস্যা হয়েছিল। আমরা পুনরায় তার নাম জীবিত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করেছি। ১৪ মাস পর জীবিত ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় দৈনিক  ভোরের দর্পন পত্রিকাকে ধন্যবাদ জানান সহিদা বেগম।

তিনি বলেন, ‘আমি অনেক খুশি  সাংবাদিক আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার কারণেই আমি আজ জীবিত হয়েছি, এজন্য তাদের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। আপনারা সংবাদের মাধ্যমে আমাকে তুলে না ধরলে আমি হয়তো কখনো জীবিত হতে পারতাম না। নির্বাচন কমিশন আমার হাতে একটি সার্টিফিকেট দিয়েছে এবং সেই সার্টিফিকেট দিয়ে আমি আমার স্বামীর টাকা উত্তোলন করতে পেরেছি।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by