খুলনা

ঝিনাইদহে ওএমএস এর চাল আটা বিক্রিতে অনিয়ম ডিলারশীপ বাতিল

  প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫:২৪:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ সদর পৌর এলাকায় সরকারীভাবে খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) আটা ও চাল বিক্রিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসবের সত্যতাও মিলেছে মনিটরিং টিমের তদারকিতে। ইতোমধ্যেই অনিয়ম প্রমানিত হওয়াই শহরের জামতলা এলাকার মহিউদ্দিন আহম্মেদ এর ডিলারশীপ বাতিল করা হয়েছে।

জেলা খাদ্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, জেলা সদর ও পৌর এলাকায় ১৩ জন ডিলার সপ্তাহে তিন দিন করে ওএমএস আর চাল ও আটা বিক্রি করছেন। এদের ডিলার প্রতি চালের বরাদ্দ ২৩০০ কেজি (২ টন ৩০০ কেজি) এবং আটার বরাদ্দও ২৩০০ কেজি। এই বরাদ্দ ভাগ করে তিন দিনের বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য উপজেলায় ডিলার রয়েছে ১৮ জন।

বর্তমান সময়ে দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে করোনাকালীন সময়ে সাধারন মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে সরকারী খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখানে জন প্রতি ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি আটা দেওয়া কথা।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই আটা ও চাল বিক্রির ক্ষেত্রে কেজিতে দুই টাকা বেশী নেওয়া, ক্রেতাদের সাথে দু:ব্যবহার, আটা নিলে চাল দেওয়া হয়না, চাল নিলে আটা দেওয়া হয় না, সরকারী চাল গোপনে বিক্রির মত অভিযোগ ওঠে ওএমএস ডিলারদের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, জেলা তথ্য কর্মকর্তা, জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা সহ সাতটি দপ্তরের প্রধানদের নিয়ে ওএমএস মনিটরিং টিম গঠন করা হয়।

এই টিমের তদারকিতে অনিয়ম পাওয়ায় জেলা শহরের জামতলা এলাকার মহিউদ্দিন নামের ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়ম মেলায় তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০ দিন আগে ব্যাপারী পাড়ার ফজল মাহমুদের বিরুদ্ধে ১৫০ কেজি মজুদ চাল এবং মুক্তিযোদ্ধা রুহুল কুদ্দুস সড়কের শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধেও মেলে একই অভিযোগের সত্যতা।

শহরের খাজুরা এলাকার গৃহবধু মর্জিনা বেগম জানান, আমরা খুবই গরিব মানুষ, ছেলের ইনকামে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। তাই কম দামে পাওয়া যাই বলে ওএমএস এর পাঁচ কেজি আটা ও চাল কিনতে গিছিলাম। কিন্তু আমাকে চাল না দিয়ে ১০ কেজি আটা দিয়েছে।

 

ওএমএস ডিলার মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, যখন টাকা থাকে না তখন হয়তো চাল একটু এদিক ওদিক করা হয়। তাছাড়া সবই ঠিক থাকে।
ওএমএস মনিটরিং টিমের সদস্য ও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল জনান, গেল দুই-তিন মাস যাবত খাদ্য বিভাগের চাল আটা বিক্রি করা ডিলাররের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ আসছিল। তাদের অনিয়ম ধরতে ক্রেতা সেজেই লাইনে দাড়ায় চাল কিনতে শহরের জামতলা বিক্রয় কেন্দ্রে। কিছুক্ষন পরে আমাকে জানায় চাল বিক্রয় হচ্ছে না। আটা বিক্রি শেষ হলে তারপর চাল বেচবো। পরে স্থানীয় ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি কেজিতে চাল-আটাতে দুই টাকা বেশী দাম নেন।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান জানান, করোনাকালে সাধারন খেটে খাওয়া দিনমজুর সহ দরিদ্র মানুষের জন্য ওএমএস কার্যক্রম চালু রেখেছে যাতে করে তারা অল্প টাকায় কিনে খেতে পারে। তবে কিছু জায়গা থেকে অনিয়মের অভিযোগ আসছে। মনিটরিং টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by