ঢাকা

টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ২৫ নভেম্বর ২০২০ , ৭:৫২:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

 

কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৩ নং গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুষেন সেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে অনাস্থা জানিয়েছেন একই ইউনিয়ন পরিষদের ৭ ইউপি সদস্য।

এ সংক্রান্তে গোপালপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য অপূর্ব রায়, ওবায়দুর রহমান, বাবুল বালা (বাবু), সঞ্জু রানী মন্ডল, প্রদীপ ম-ল, দ্বীগজয় মজুমদার ও নন্দিতা খান সহ ভুক্তভোগী ৭ ইউপি সদস্য চলতি মাসের গত ১১ নভেম্বর গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সহ ১২ নভেম্বর দুদক এর ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান বরাবরে অনাস্থা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুষেন সেন বিশেষ বরাদ্দের আওতায় “মিত্রডাঙ্গা ব্রীজ হতে দয়াল বাড়ৈ-এর বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণ” কাজ নামমাত্র করে প্রকল্পের ব্যয় বাবদ প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে নেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কাবিটা’র আওতায় “সোনাখালী তালুকদার বাড়ী হতে রত্তন গাজীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ” কাজ সম্পন্ন হয়। এরপরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কাবিটা’র আওতায় ওই কাজ আবারো করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেখানে ১%-এর বরাদ্দর আওতায় কাজ করা হয়। সর্বশেষে উক্ত কাজ দেখিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দ থেকে ৩৩,৫০,০০০/ টাকা আত্মসাৎ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান সুষেন সেন প্রভাব খাটিয়ে গোপালপুর তালুকদার মার্কেটের পশ্চিম পাশে সরকারি খাস জমি দখল পূর্বক ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় পার্শ্ববর্তী সড়কটি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত ৩,৩০০টি বাড়ির হোল্ডিং কার্ড/ডিজিটাল প্লেট দেওয়ার কথা বলে প্রতিটি বাড়ি থেকে ২৭৫/ টাকা করে মোট ৯,০৭,৫০০/ টাকা ভুয়া একটি এনজিও’র মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান ১%-এর বরাদ্দ আত্মসাৎ করেন। এছাড়া ইউপি সদস্যদের নিকট থেকে ২০% টাকা অগ্রিম নিয়ে তাদেরকে কাবিখা/কাবিটা প্রকল্পের কাজ বরাদ্দ দেন। গোপালপুর ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত মোট ১,০৮৮টি ভিজিএফ কার্ডের মধ্যে ১১৩টি ভিজিএফ কার্ডের মালামাল সুবিধাভোগীদেরকে না দিয়ে নিজে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন।

গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুষেন সেন অর্থের বিনিময়ে ভারতীয় নাগরিককে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করেন। টাকার বিনিময়ে তিনি ওয়ারিশন সনদ প্রদান করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া হতদরিদ্রদের ঈদের শাড়ি, লুঙ্গি ও কম্বল বিতরণ না করে সেগুলো বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেন। গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুষেন সেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে ৭ ইউপি সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আমাদেরকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে তাদের সেবা প্রদান করার সুযোগ দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের অপ্রতিরোধ্য দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির কারণে যদি আমরা জনগণের সেবা দিতে ব্যর্থ হই, তাহলে এই দায়ভার কার। তাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত এর প্রতিকার না পেলে আমরা সকলেই একযোগে ইউপি সদস্য পদ ছেড়ে দিবো। এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুষেন সেন বলেন, এক পক্ষের অভিযোগ শুনে নিউজ করবেন না, আপনারা (গণমাধ্যম কর্মীরা) তদন্ত করেন। গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের ডিডিএলজি মোঃ ইলিয়াছুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে, প্রতিবেদন পেয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by