ময়মনসিংহ

বকশীগঞ্জে অসহায় বৃদ্ধার পাশে মানবিক ওসি সম্রাট

  প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২০ , ৮:২৩:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি: বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রবল সদিচ্ছা থাকলে এভাবেই বুঝি নিঃস্বার্থ ভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। এভাবেই বুঝি প্রমাণ করা যায় শুধু একজন মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বদলে দিতে পারে আরেকজন অসহায় মানুষের অবস্থা। পাঠক বলছিলাম বকশীগঞ্জ থানার মানবিক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম সম্রাটের কথা। এক বৃদ্ধ মায়ের দয়িত্বভার নিজের কাধেঁ তুলে নিয়েছেন তিনি। নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন এবং প্রতি মাসে নিজ হাতে বাজার করে অসহায় বৃদ্ধা হাজেরা বেগমের বাড়িতে দিয়ে আসেন। প্রতি মাসের ন্যায় গত বুধবার বাজার থেকে চাল-ডাল-আলু-তেল-চিনি-সাবান-ডিটারজেন্ট পাউডার-মুরগী,আপেল-কমলা-বিস্কুট-কলা-শুকনো খাবারসহ নানা খাদ্য সমাগ্রী কিনে নিজে তার বাড়ীতে পৌছে দিয়েছেন। প্রতিমাসের ১ তারিখেই পুরো এক মাসের খাদ্য সামগ্রী দিয়ে আসেন তিনি। যাতে করে বৃদ্ধা হাজেরা বেগমের চলতে কোন প্রকার কষ্ট না হয়। এছাড়াও হাজেরা বেগম যাতে নিরাপদে থাকতে পারে তার জন্য একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন মানবিক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম সম্রাট। জানা যায়, হাজেরা বেগম বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় মধ্য পলাশতলা সকাল বাজারের কাছাকাছি হাজেরা বেগম তার বোনের ভাংগা রান্নাঘরে রাত কাটান। ছেলে মেয়ে, স্বামী বা আপন বলতে কেউ নেই। প্রায় ৪০ বছর আগে তার স্বামী মারা গেছে। এর পর থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নিবার্হ করেন। বয়স শত বছর কাছাকাছি। কিন্তু তার ভাগ্যে বয়স্ক ভাতা, বিধবাভাতা কিছুই জুটেনি। পাননি ভিজিএফ, ভিজিডিসহ সরকারি ত্রাণ সামগ্রী। কোন জনপ্রতিনিধির সু-নজরেও পড়েননি তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় হাজেরা বেগম বেশি সমস্যায় পড়ে যান।
গত প্রায় তিনমাস পূর্বে বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক এম শাহীন আল আমীন তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন লিখেন। স্থানীয় দৈনিক গণজয় পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পরেই বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের নজরে আসে। তাৎক্ষনিক সহযোগীতার হাত বাড়ান ইউএনও আ.স.ম জামশেদ খোন্দকার, ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে অসহায় বৃদ্ধা হাজেরা বেগমের দায়িত্বভার গ্রহন করেন বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম সম্রাট। ঘোষনা দেন যতদিন বকশীগঞ্জ থানায় কর্মরত থাকবেন ততদিন ওই বৃদ্ধার দায়িত্বভার বহন করবেন তিনি। যেই কথা সেই কাজ। শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিমাসের ১ তারিখে পুরো মাসের বাজার করে হাজেরা বেগমের কাছে দিয়ে আসেন তিনি।
বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)শফিকুল ইসলাম সম্রাট বলেন, মানবিক কারনেই আমি অসহায় বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব নিয়েছি। মানুষ মানুষের জন্য তাই এটা একজন মানুষ হিসেবে আমার দায়িত্ব বলে মনে করি। যতদিন বাচঁবো জনকল্যানে কাজ করে যাবো।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by