বাংলাদেশ

বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, যশোর ও মেহেরপুরে শীতবস্ত্র বিতরণ

  প্রতিনিধি ১ জানুয়ারি ২০২২ , ৫:২৭:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

 

চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) শিশুদের হাতে বসুন্ধরা গ্রুপের উপহার কম্বল তুলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পক্ষ থেকে শিশু পরিবারের শিশুদের জন্য কম্বল পাঠানো হয়। শিশু পরিবারে থাকা সকল শিশু কম্বল পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।

সরকারি শিশু পরিবারের শুকতারা খাতুন বলে, ‘আমি খুবই খুশি। আজ আমার দুটি খুশির খবর। আমি আজ এসএসসি পাস করলাম এবং আজই কালের কণ্ঠ শুভসংঘের কম্বল পেলাম। আমি লেখাপড়া করার সময় শীতে কম্বল গায়ে দিয়ে পড়তে বসবো।’

শিশু পরিবারের উপতত্বাবধায়ক রোম্মানা বিলকিস বলেন, এখানকার শিশুদের চোখেমুখে খুশির ঝলক দেখা গেছে। কম্বল পেয়ে তারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েছে।

 

নড়াইলের মহিষখোলা পুরাতন বাজারের দিনমজুর দিলু হোসেন বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল পেয়ে মহাখুশি। হাসি মুখে তিনি বলেন, প্রচণ্ড শীতে কাজে বের হতে পারি না, এই কম্বল গায়ে দিয়ে ভোরে কাজে বের হবো। এতোদিনে একটা কাজের কাজ হয়েছে। একই রকমভাবে কম্বল পেয়ে খুশি এলাকার দিনমজুর, খেটে খাওয়া শীতার্ত সাধারণ মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ১১টায় নড়াইল সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের মাঠে নড়াইল সদরের ৪ শতাধিক শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। জেলায় মোট একহাজার কম্বল দেওয়া হবে।

প্রচণ্ড শীতের মধ্যে প্রথমবারের মতো কম্বল পেয়ে খুশি সবাই। তারা বলেন, প্রচণ্ড শীতে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের কেউ কিছু দেয় না। ঢাকা থেকে এসে আমাদের এভাবে কম্বল দেয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ।

শুভসংঘের নড়াইল জেলা সভাপতি ও নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এই উপহার নড়াইলের ১ হাজার মানুষের কাছে আমরা পৌঁছে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে শুভসংঘের মাধ্যমে মানবিক সকল কর্মসূচি চলমান থাকবে।

নড়াইল পৌর মেয়র ও শুভসংঘের সহসভাপতি আনজুমান আরা বলেন, বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের এই মানবিক সহায়তা আমাদের অনুপ্রাণীত করে। দেশের আরো ধনী ব্যবসায়ীরা মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন এটাই আমরা আশা করি।

 

‘জম্মের শীত পড়িছে, আজগে কম্বলডা পায়ে নাত্তিরে শান্তিতে ঘুমাতি পারবানি। এরাম ডাহে কেউ কোনো দিন কম্বল দিনি। আল্লাহ তোমাগের ভালো করবে।’ বসুন্ধরা গ্রুপের নতুন কম্বল পেয়ে ৭৫ বছরের বৃদ্ধ অন্ধ আব্দুর রহিম এভাবে তাঁর অনুভুতি প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোরের অভয়নগরে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় কালের কণ্ঠ শুভসংঘ অভয়নগর উপজেলা শাখার আয়োজনে নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয় মাঠে ২০০ দরিদ্র ও এতিম শিক্ষার্থীর মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

 

 

 

শুভসংঘের সভাপতি সৈয়দ সোহায়িব ইমতিয়াজ ইয়াদ বলেন, দুইশত কম্বল পেয়েছি। কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ঘুরে দরিদ্র শীতার্ত ও এতিম শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে সুষ্ঠুভাবে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। কম্বল দেওয়ার জন্য তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামানকে ধন্যবাদ জানান।

 

৯০ বছরের হেবু কাজী। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এ মানুষটি বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল উপহার নিতে এসেছিলেন সদর উপজেলার খন্দকারপাড়া থেকে। এর আগে কখনো তিনি কম্বল পাননি। এই প্রথম কম্বল পেয়ে তিনি খুশিতে আপ্লুত হয়ে পড়েন। কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের মালিককে যেন ভালো রাখো।’

শহরের ঘোষপাড়ার খোদেজা খাতুন বলেন, ‘বহু মানুষ কম্বল পেয়েছে। আমরা কুনুদিন কম্বল পাইনি। বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল পেয়ে খুবি খুশি হয়িছি।’

বৃহস্পতিবার সকালে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় কালের কণ্ঠ শুভসংঘের আয়োজনে মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় মাঠে কম্বল বিতরণ করা হয়।

মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন কম্বল বিতরণের উদ্বোধন করেন। এ সময় পৌর মেয়র বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এই মহৎ কর্মের মাধ্যমে মেহেরপুরসহ সারাদেশের শীতার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক মূল্যেবোধের কাজ করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের ন্যায় দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এধরণের কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, বসন্ধুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান স্যারের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা মেহেরপুরসহ সারাদেশে দেড় লাখ কম্বল বিতরণ করছি। যাতে শীতার্ত মানুষগুলোর কষ্ঠ একটু হলেও লাঘব হয়।

জেলার সদর উপজেলায় ৪০০ এবং মুজিবনগর উপজেলায় ৩০০ শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। মুজিবনগর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে শীতার্তদের মাঝে কম্বল তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন সরকার। পরে গাংনী উপজেলায় ৩০০ কম্বল বিতরণের মধ্যে দিয়ে জেলায় এক হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by