দেশজুড়ে

বামতীর রক্ষা বাঁধ চায় গঙ্গাচড়ার মানুষ

  প্রতিনিধি ৯ জুলাই ২০২০ , ৭:১৫:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

আব্দুল বারী বাবু, গঙ্গাচড়া (রংপুর) : ডানতীর রক্ষা বাঁধের মত বাম তীরেও বাঁধ চায় রংপুরের গঙ্গাচড়ার তিস্তাপাড়ের মানুষ। বর্ষাকালে উজানের পানি ও পাহাড়ী ঢলে দুই কুল ছাপিয়ে যায় তিস্তার পানিতে। পানি কমে গেলেই শুরু হয় ভাঙন। তিস্তার ভয়াল থাবা থেকে মানুষদের বাঁচাতে নদীর ডানতীর শাসনে ব্যবস্থা নিলেও বাম তীরের বাসিন্দারা রয়েছে চরম উৎকন্ঠায়। তাই বাম তীরে বাঁধের দাবী তুলেছেন চরা লের মানুষ।
জানা যায়, প্রতি বছর উজানের পানির সাথে পলি এসে তিস্তার বুক ভরাট হচ্ছে। সেই সাথে নদী ভাঙ্গনের ফলে নতুন এলাকায় চর জাগছে। শুস্ক মৌসুমে পানি শূন্য নদীতে দেখা যায় তিস্তার করুণ দৃশ্য। পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি ধরে রাখার সক্ষমতা হারিয়েছে তিস্তা। এবছর বর্ষাকালে গজলডোবা বাঁধ দিয়ে ভারত পানি ছেড়ে দিলে তিস্তার নদীতে ৩ ধাপে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নি¤œা ল প্লাবিত হয়েছে। ফলে গঙ্গাচড়া উপজেলায় নদীর তীরবর্তী ও চরের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আমনের বীজতলা, ভুট্টা, পাটসহ বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষেত পানিতে ডুবে যায়। এসব এলাকায় দেখা যায় তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট। গবাদি পশু, হাঁস-মুরগিসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েন তারা। বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন।
তিস্তার বামতীরে অবস্থিত গঙ্গাচড়ার লহ্মীটারী ইউনিয়নের চর চল্লিশসাল, শংকরদহ, পূর্ব ইচলী, নোহালী ইউনিয়নের ফোটামারী, বৈরাতী, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর মটুকপুর, বিনবিনার চর, চর চিলাখাল এলাকায় ভাঙনে ইতোমধ্যে ২ শতাধিক ঘর-বাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিনবিনার চরের পাকা সড়কের প্রায় ৫’শ ফুট অংশ ভেঙ্গে নদীগর্ভে চলে গেছে, চিলাখালচর সপ্রাবি এর পুরাতন ভবন বিলীন হয়েছে । এছাড়াও প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। তিস্তাপাড়ের মানুষের কষ্টের স য় শেষ হয়ে যায় বন্যা আর ভাঙনে।
পূর্ব চর ইচলীর দুলাল মিয়া বলেন, এবার ভাঙনে থাকা ঘরটাও চলি গেইছে, কষ্ট করি যেকনা স ায় করি, সেকনা তিস্তায় খেয়া ফেলায়। স্থানীয়রা জানায়, চিলাখাল-বিনবিনা থেকে বাগেরহাট পর্যন্ত যদি বেরি বাঁধ দেয়া হয় তাহলে তিস্তার বামতীরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার জায়গার ঘরবাড়ি-ফসলী জমি বাঁচানো যাবে।
লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল হাদী বলেন, তিস্তা নদী সঠিকভাবে খনন না হওয়ার কারণে শেখ হাসিনা সেতুর নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত না হয়ে বাম দিক থেকে পানি গিয়ে তিস্তায় মিলিত হচ্ছে। এতে করে বামতীরে থাকা শংকরদহ, জয়রাম ওঝা, চল্লিশসাল, ইচলী, পূর্ব ইচলীসহ চরগুলোতে প্রতি বছর বন্যা, ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন করলেও তা কোন কাজে আসেনি।
বামতীরে বাঁধের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু বলেন, বামতীরে বাঁধ হলে কোলকোন্দ ইউনিয়নের ফসলের ক্ষেত, ঘরবাড়ির আর কোনও ক্ষতি হবে না। বাড়বে কৃষি উৎপাদন।
এ ব্যাপারে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও রংপুর-১ গঙ্গাচড়া আসনের সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা ভোরের দর্পণকে বলেন, তিস্তা নদী খননে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি রয়েছে। ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন এলাকা ভাঙনের শিকার হচ্ছে। তিস্তা নদী ভাঙন রোধে বামতীরে বাঁধ নির্মাণসহ নদীপাড়ের মানুষকে রক্ষায় মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ রাখাসহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by