দেশজুড়ে

বাস থেকে শিশুকে ছুড়ে ফেললেন সুপারভাইজার-হেলপার! 

  প্রতিনিধি ২৮ মে ২০২১ , ২:১৮:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যাত্রী নেয়ার প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের চারজনকে বেধড়ক মারধর করেছেন বাস শ্রমিকরা।

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময়ে মারধরের শিকার ওই পরিবারের সঙ্গে থাকা ৭ বছরের এক শিশুকে বাসের জানালা থেকে বাইরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, যাত্রীর সঙ্গে তর্কাতর্কি বাসস্ট্যান্ডে হলেও তাদের ওই বাসের শ্রমিকরা মারধর করেছে স্ট্যান্ডের বাইরের সড়কে।

তিনি বলেন, ঘটনাটি ঘটিয়েছে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরা। আপনারা জানেন, তাদের কাছে বরিশালবাসী এক ধরনের জিম্মি। এ ঘটনার বিষয়ে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতাদের জানাতে পারব, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিতে পারব না। ব্যবস্থা নিতে গেলে ঝালকাঠি মালিক সমিতি রূপাতলী থেকে বাস সরিয়ে নিয়ে ঝালকাঠীর কালিজিরায় স্ট্যাড করে। সেই সঙ্গে ঝালকাঠীতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বরিশালের বাস।

মারধরের শিকার চারজন হলেন- মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে শামীম সিকদার (২৭), তার মা হাসনুর বেগম (৫৫), ভাগ্নে বৌ কারিমা ও কারিমার সাত বছরের মেয়ে মুনিয়া।

শামীম সিকদার জানান, নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ড কালিজিরায় বসবাস করলেও তার মূল বাড়ি মঠবাড়িয়ায়। শুক্রবার মঠবাড়িয়া যাচ্ছিলেন তারা।

তিনি বলেন, সাধারণ সময়ে বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়ায় ভাড়া দেড়শ টাকা। কিন্তু করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। আমরা চারজনই ২৪০ টাকা করে টিকিট নিয়ে সিটে বসেছি। নিয়ম হচ্ছে, এক সিট খালি রাখা। কিন্তু ওই বাসটির সুপারভাইজার এক সিট তো ফাকা রাখছেই না বরঞ্চ আরও যাত্রী তুলছিল দাঁড় করিয়ে নেওয়ার জন্য। আমি প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ বাসস্ট্যান্ডের ১৫/২০ জন শ্রমিক মিলে বাসের সিটেই আমাকে মারধর করে। আমাকে বাঁচাতে গেলে শ্রমকিরা আমার মা, ভাগ্নে বৌ কারিমাকে মারধর করে শুধু আমাদের মারধর করছে সেটাই নয়, আমার ভাগ্নের সাত বছরের মেয়ে মুনিয়াকে জানালা দিযে ছুঁড়ে নিচে ফেলে দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মাহিম পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪৪৯৯৮) সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে ব্যাপক মারধর করা হয়। যাত্রী মারধরে শুধু ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাই নয় রূপাতলী বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাও অংশ নেয়। ওই যাত্রীকে সপরিবারে মারধরের পর বাসটি স্ট্যান্ড ছেড়ে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

শুধু মাহিম পরিবহন নয় বরিশালের অভ্যন্তরীন সব রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। প্রশাসনিক কোনো নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এভাবে যাত্রী পরবিহন করছে। এর প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে রূপাতলী বাস মালিক সমিতির লাইন বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন শামীম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি এবং মারধরের শিকার যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by