প্রতিনিধি ১৬ মার্চ ২০২৪ , ৭:১৯:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নদীমাতৃক ও কৃষি নির্ভর দেশ বাংলাদেশ। নদী আর কৃষি এ দেশের প্রাণ। খাল খনন, কৃষিখাতে ব্যাপক ভর্তুকি থাকার পরও যথাযথ উন্নয়ন না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভরপুর থাকা, খাল ও নদী নালা, শুষ্ক মৌসুমে গরু ছাগলের চারণভূমিতে পরিণত হতে দেখা যায়। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন নদ নদী ও জলাশয়ের প্রতি নজর দিলেও বাস্তব চিত্র ব্যতিক্রম।
কৃষি নির্ভর দেশে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে ঘাটতি না থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে বিজয়নগরের বেশিরভাগ গ্রামের হাজার বিঘা জমি প্রায় ধ্বংসের পথে। পানির অভাব আর দখলদারিত্বের কবলে পড়ে বিজয়নগরের প্রাণ বালিয়াজুরি নদী এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে।বালিয়া জুড়ি নদীর উত্তরে তিতাস দক্ষিণে ও তিতাস নদী। কৃষি মৌসুমে বালিয়া জুড়ি যেখানে পানিতে ভরপুর থাকার কথা সেখানে গরুর চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
নদীটি জেলার ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীতে সংযুক্ত ঢাকা সিলেট হাইওয়ে রোডের রামপুর নামক স্থান থেকে যুক্ত হয়ে দক্ষিণ দিকের নোয়াগাঙ ও বাগাদি বিল হয়ে আখাউড়া গিয়ে যুক্ত হয়েছে। নদীটির তলা ভরাট হয়ে কোথাও কোথাও প্রায় কৃষি জমির সমান হয়ে পড়েছে। গাঙটি বিজয়নগর উপজেলার রামপুর তিতাস নদী থেকে ইছাপুরা, চম্পকনগর, পত্তন, সিঙ্গারবিল ইউনিয়ন অতিক্রম করে আখাউড়া উপজেলার তিতাসের সাথে মিলেছে।
এই গাঙ খনন না হওয়ায় উপজেলার কৃষি প্রধান অঞ্চলের কৃষিকাজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি এই গাঙে নাব্যতা না থাকায়, বর্ষা মৌসুম ছাড়া পানি থাকেনা। শুষ্ক মৌসুমে কৃষকের কয়েক হাজার বিঘা ধানের জমি আশানুরূপ উৎপাদনে ব্যর্থ। তাদের দাবি অন্ততপক্ষে দেড় থেকে দুই কিলোমিটার গাঙের খনন করলে, পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে এবং নৌ চলাচলে উপযুক্ত হবে। এমনকি বর্ষা কালে পানি ধারণ ক্ষমতাও বাড়বে।
অন্যদিকে বালিয়াজুরী গাঙ হইতে দুলিয়াবিল সংযুক্তিতে প্রায় দুই কিলোমিটারের একটি খাল সাতগাঁও গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করেছে। বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের অতিপ্রয়োজনীয় খালটি ভূমি খেকোদের দখলে। খালটি দখলদারদের কবল থাকায় গ্রামবাসীদের পানি নিষ্কাশনে ব্যাঘাত ঘটছে। বালিয়াজুড়ি গাঙ ও গাঙের সাথে সংযুক্ত সাতগাঁও গ্রামের খালটি শুষ্ক মৌসুমে নৌ চলাচলের পরিবর্তে সড়কে পরিণত হয়।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গাঙের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। খালটি দখলমুক্ত করে প্রয়োজনে খালবার্ট ও খনন করে খালিয়াজুড়ি গাঙের ঐতিহ্য রক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনসাধারণ।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী (চ:দা:) মো: মনজুর রহমান বলেন, আমাদের হাতে এই গাঙ্গের খননের কোন প্রকল্প আসেনাই। শুধু লইস্কা বিলের খনন ছাড়া। ভবিষ্যতে যদি আমাদের হাতে খননের অনুমোদন আসে তাহলে দেখব।