ঢাকা

শ্রীপুরে হলুদ তরমুজ চাষে সফলতা

  প্রতিনিধি ২৬ এপ্রিল ২০২১ , ৬:৫৯:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

এমদাদুল হক, শ্রীপুর (গাজীপুর)

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা টেপিরবাড়ী গ্রামে হলুদ তরমুজ চাষে স্বাবলম্বী আব্দুল হামিদ। গতবছর ইউটিউবে চাষ পদ্ধতি দেখে প্রথমবার চুয়াডাঙ্গা থেকে এক কৃষকের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বীজ এনে নিজের ১০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেন হলুদ তরমুজ। এবং সফলও হয়েছিলেন। এবার বেশ বড় পরিসরে হলুদ তরমুজের চাষ করেন। প্রায় দুই হাজার চারা রোপণ করেন ফেব্রুয়ারি মাসে।

এখন তার মাচায় দুলছে হলুদ, সোনালী ও সবুজ রংয়ের শতশত তরমুজ। এই মৌসুমে অন্যান্য জাতের তরমুজের বাজার দরের সঙ্গে এই তরমুজের দরও সমানতালে পাল্লা দিয়ে চলছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে।

কৃষক আব্দুল হামিদ বর্তমানে তাই বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন ৩ লাখ টাকা। গেল বছর স্বল্প পরিসরে তিনি বিক্রি করেছিলেন প্রায় ১ লাখ টাকার। সোমবার দুপুরে হামিদ মিয়ার তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, মাটি থেকে ১৫-২০ সেন্টিমিটার উঁচু লম্বা মাদা (বেড) তৈরি করে মালচিং পেপার দিয়ে শক্ত করে ঢেকে দেয়া হয়েছে। চার হাত অন্তত একটি বেড। এভাবে প্রায় ৩৫ শতাংশ জমিতে তৈরি করা হয়েছে ৩০টি বেড। এর ওপরে ছাউনির মতো ঘুরিয়ে মাচা দেয়া হয়েছে। সে মাচায় ঝুলে রয়েছে শত শত বাদামি ও সবুজ রংয়ের বেবী তরমুজ। এসব তরমুজ বেশ রসালো ও সুমিষ্ট। কচি অবস্থায় তরকারি অবস্থায় রান্না করেও খাওয়া যায়।

কৃষক হামিদ মিয়ার জানান,তিনি ইউটিউবের মাধ্যমে এ জাতের তরমুজ চাষ দেখে অনেকটা শখের বশে চাষ শুরু করি। এটি চাষে মাচা তৈরি ছাড়া তেমন কোনো খরচ হয়নি। তীব্র গরমে শরীরে পানির জোগান দেয়ায় অনেকে সরাসরি তার ক্ষেত থেকে তরমুজ কিনতে আসেন। পাশাপাশি চাষ পদ্ধতিও জেনে যান। স্থানীয় কৃষি বিভাগ তাকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে আমাকে। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালে ডিগ্রি পাস করার পর বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশ ছিলাম। আর্থিক অভাবের কারণে কিছুই করার সাহস পাচ্ছিলাম না।

 

কম খরচে কিছু একটা করে অধিক লাভবান হওয়া যায় এমন চিন্তা সবসময় মাথায় কাজ করত। বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে তরমুজ চাষের পদ্ধতি দেখে আগ্রহ বাড়ে আমার। গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে, গাজীপুরের মাটি অত্যন্ত উর্বর। এখানে সব ধরনের ফসলই উৎপাদন হয় তবে এতোদিন অধরা রয়েছিল তরমুজ চাষ। গত কয়েক বছর ধরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কৃষকরা তরমুজের আবাদ করে আসছেন। জেলায় শুধু মাত্র কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলায় তরমুজের আবাদ হয়।

জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, গাজীপুরের দুটি উপজেলায় এখন পর্যন্ত এ জাতের তরমুজের চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে নানা ধরনের কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিষমুক্ত এই ফল স্থানীয়ভাবে চাষ করে কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছেন। লাভজনক বিবেচনায় কৃষকদের মধ্যে প্রতিনিয়ত আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই জাতের তরমজু চাষ নিয়ে। আমাদের আশা, কৃষি অর্থনীতিতে ছোঁয়া লাগবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by