চট্টগ্রাম

বিজয়নগরে সরকারি বিদ্যালয়ের মাটি বিক্রিয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন

  প্রতিনিধি ৫ মার্চ ২০২৩ , ৫:০৭:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

আলমগীর হোসেন বিজয়নগর প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া :

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের মাটি অনৈতিকভাবে জনসাধারণের কাছে বিক্রির অভিযোগে মানববন্ধন।

৫ মার্চ রবিবার সকাল ১১ ঘটিকায় উপজেলার দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলীদেরকে নিয়ে বিদ্যালয়ের গেইট হতে আমতলী বাজার হয়ে ফুলতলী মোড় পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে বিশাল লাইনে এ মানববন্ধন করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের একটা স্লোগান ছিল তাদের এই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের হোসেন সাগর নামক দিঘির মাটি ঠিকাদার অন্যায় ভাবে মাটি বাইরে বিক্রি করতে পারবে না।

তথ্য ও বাস্তবে দেখা যায়, দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে দুটি পুকুর রয়েছে, একটি উপজেলা চান্দুরা ডাকবাংলায় ও অপরটা বিদ্যালয় সংলগ্ন। বহু বছর যাবত এই পুকুর গুলো খনন না করার কারণে, আশেপাশের বসতবাড়ি ভেঙ্গে ক্ষতির শামিল ছিল প্রায়, এসব চিত্র পরিবর্তনের লক্ষ্যে সরকার ২০২১ সালে এই পুকুর খননের কনট্রাক মোট ৬৭ লক্ষ টাকায় এম এম বিল্ডার্স নামক ঠিকাদারকে দিলে, খননের নামে ঠিকাদার বিদ্যালয়ের ডাকবাংলার পুকুরের পাড়ের কাজ শেষ করে, অবশিষ্ট মাটি নিষিদ্ধ ড্রেজার দ্বারা বিক্রি অভিযোগ উঠেছিল।

বর্তমানে স্কুল সংলগ্ন পুকুরের খননের কাজ বিলম্বিত ও অসমাপ্ত রেখে অবশিষ্ট মাটি তাদের ইচ্ছা মত ভেকু ও ট্রাক্টর দ্বারা গ্রাহকের কাছে বিক্রির করছে।

এম এম বিল্ডার্স এর ঠিকাদার মিনহাজ বলেন, কনট্রাক আমি পেয়েছি পুকুরের পাড় বাধার জন্য, অতিরিক্ত কিছু মাটি আমাকে সরাতে হচ্ছে। তাও স্কুলের কিছু ডোবা ভরাট করে দিব বলে বলেছি। প্রধান শিক্ষক আমাকে প্রেসার ক্রিয়েট করে চাঁদা দাবি করে আমার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, পুকুরের কাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা পুকুরের নামতে পারেনা, তারা আমাকে পুকুরে নেমে কাজে বাধা দিয়েছে যা অন্যায় করেছে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শাজাহান খান বলেন, এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে আছি, যদিও ঠিকাদার কাজ পেয়েছে শুধু খননের, ঠিকাদার এখন আমাদের কাজ অসমাপ্ত রেখে মাটি জনসাধারণের কাছে বিক্রি করছে, আমি ঠিকাদারকে বলছি আমাদের স্কুলের ভরাটের ডুবা বাকি আছে এবং খননের অবশিষ্ট কাজ করে, বাকি মাটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে পরামর্শক্রমে ব্যবস্থা, কিন্তু তাদেরকে বারবার নিষেধ দেওয়ার পরও মাটি বিক্রি থামছে না, উল্টো আমাকে ভয় ভীতি দেখাচ্ছে আমি বাধা দিলে সে কাজ কাজ রেখে উঠে যাবে।

উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশিকুর রহমান ভুইয়া সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঠিকাদার কোনভাবেই মাটি বিক্রি করার অনুমতি নাই, আমিসহ কয়েকজন মিলে ঠিকাদারকে কয়েকবার বাধা দিয়েছি কিন্তু সে শুনে নাই, শুনেছি প্রধান শিক্ষকের সাথেও নাকি খারাপ ব্যবহার করেছে। আমি বিষয়টা এসিলেন্ট স্যারকে জানিয়েছি স্যার বলছে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান খান শাওন, সাংবাদিককে বলেন, বিষয়টা আমি অবগত না, পরে আমি শুনেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, হ্যাঁ আমি শুনেছি ঠিকাদার মাটি অন্যত্র নিতেছে, সে ক্ষেত্রে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে আমরা অবগত করেছি এবং ঠিকাদারকে বলেছি মাটি যদি পুকুরের পাড়ের কাজে সংকুলান না করা যায়, সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাটি কি করা এতে পারে আপনারা সঠিক নিয়মে এলজিইডি এর কাছ থেকে লিখিত পারমিশন আনেন। যেহেতু বিষয়টা আমার উপজেলার প্রশাসনের সরাসরি সংযুক্ত না, তাই আমি এলজিইডি কে বিষয়টা অবগত করেছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদেরকে কোন পারমিশন দেওয়া হয়নি মাটি বিক্রি করার জন্য। আমি তাদেরকে বলেছি পারমিশন ব্যতীত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত ব্যক্তিবর্গ ও এলাকাবাসী তা বাধা দেবেই।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by