দেশজুড়ে

মাদরাসার নিরাপত্তাকর্মী সুপারের স্ত্রী, শ্যালিকা আয়া

  প্রতিনিধি ৮ নভেম্বর ২০২৩ , ৫:৪৭:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

মাদরাসার নিরাপত্তাকর্মী সুপারের স্ত্রী, শ্যালিকা আয়া

সুপারের শ্বশুর হলেন মাদ্রাসার সভাপতি, স্ত্রী নিরাপত্তাকর্মী আর আয়া হিসেবে আছেন শ্যালিকা। এমন এক পারিবারিক মাদ্রাসা রয়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা গ্রামে। প্রতিষ্ঠানটির নাম দেউলডাংরা নুরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা।

জানা গেছে, ১৯৬৩ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারি স্বীকৃতি পায় (এমপিও) ১৯৮৭ সালে। দীর্ঘ সময় পার হলেও মাদ্রাসাটির অবস্থা জরাজীর্ণ। নেই কোনো সাইনবোর্ড। মাদ্রাসার পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে তিনটি টিনশেড ঘর। দক্ষিণ পাশের টিনশেডটি মাদ্রাসার অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

মাদ্রাসাটিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৫০ জন। বিপরীতে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ১৯ জন। কাগজে-কলমে ৩৫০ শিক্ষার্থী থাকলেও নিয়মিত উপস্থিতি অর্ধেকেরও কম। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন কাজী নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এই মাদ্রাসার পাশেই রয়েছে আরেকটি মহিলা মাদ্রাসা। সেটার প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। দুটি মাদ্রাসাই এমপিওভুক্ত। এর মধ্যে দাখিল মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্বে আছেন কাজী নুরুল ইসলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দাখিল মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির জামাতা মোহাম্মদ এনামুল হক। একই মাদরাসায় নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া হিসেবে চাকরি দিয়েছেন নিজের দুই মেয়েকে। তারা হচ্ছেন- নিরাপত্তাকর্মী শামছুন্নাহার ও আয়া ছদরুন্নাহার। শামছুন্নাহার সুপারের স্ত্রী। অন্যদিকে পাশের মহিলা মাদ্রাসায় সুপার হিসেবে রয়েছেন কাজী নুরুল ইসলামের আরেক জামাতা। আর সেই মাদ্রাসার সভাপতি কাজী নুরুল ইসলামের স্ত্রী।

দাখিল মাদ্রাসাটিতে প্রায় পাঁচ মাস আগে নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে ওই পদের জন্য ছয়জন আবেদন করেন। শেষ পর্যন্ত সুপারের স্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই কায়দায় আয়া পদটি বাগিয়ে নেন সুপারের শ্যালিকা। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা ধরনের সমালোচনা চললেও কারো কোনো কথায় পাত্তা দেয়নি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ পেলেও তারা কাজ করেন না। লাকি আক্তার নামে এক নারীকে দিয়ে কাজ করানো হয়। সে জন্য মাদ্রাসার তহবিল থেকে তাকে ভাতাও দেওয়া হয়। নিরাপত্তাকর্মী শামছুন্নাহার ও আয়া ছদরুন্নাহার মাঝে মধ্যে  মাদ্রাসায় গেলেও তারা কোনো কাজ করেন না। অফিসে সুপারের কাছেই বসে থাকেন। 

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, শ্বশুরই নিজের মেয়েদের চাকরি দিয়েছেন। এটা উনার ব্যাপার। আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। 

নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম জানান, নিয়োগের সময় তার আপত্তি ছিল। তারপরও কীভাবে কী হলো জানেন না তিনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by