চট্টগ্রাম

মানহীন সেমাইয়ে সয়লাব চট্টগ্রামের বাজার

  প্রতিনিধি ১৬ মার্চ ২০২৪ , ৭:৪১:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মানহীন সেমাইয়ে সয়লাব চট্টগ্রামের বাজার

রমজান ও ইদ উপলক্ষ্যে মানহীন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি সেমাইয়ে সয়লাব হয়ে গেছে পুরো চট্টগ্রামের বাজার। একাধিক অভিযান আর জরিমানায়ও থামছেনা সেমাই নামক বিষ তৈরির এ কারবার। অভিযান শেষে পুনরায় সেমাই উৎপাদনে মত্ত থাকেন অসাধু কারবারিরা।

অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি এসব সেমাইকে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলা সেমাই পল্লি হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রাম মহানগরীর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ,রাজাখালী ও মিয়াখান নগর এবং বাকলিয়া এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে ঘরে ঘরে বাংলা সেমাই তৈরির কাজ চলছে। নারী-পুরুষরা কেউ ময়দার খামির তৈরি করছেন, কেউ যন্ত্রে সেমাই বানাচ্ছেন, কেউ আবার বানানো সেমাই বাড়ির উঠানে রোদে শুকাচ্ছেন। এভাবে তৈরি হওয়া সেমাই শেষে যাচ্ছেন নগরী ও উপজেলার বিভিন্ন বাজার হয়ে ভোক্তার কাছে।

বাকলিয়ার মিয়াখান নগর ও তুলাতলী এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ১০-১৫টি কারখানায় কাজ চলছে। অধিকাংশ কারখানা স্যাঁতস্যাঁতে, নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন। কেউ বসতঘরে, কেউবা বাড়ির উঠানে, আবার কেউবা রাস্তার পাশে নালার উপর সেমাই তৈরির যন্ত্র বসিয়েছেন। সবচেয়ে নোংরা পরিবেশে সেমাই তৈরি হচ্ছে চাক্তাই বস্তি ঘরগুলোতে।

এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি হচ্ছে। এসব সেমাই তৈরি বন্ধে জেলা প্রশাসন ঝটিকা অভিযান চালাচ্ছে মাঝে মধ্যে। সম্প্রতি সেরকম একটি অভিযানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত চাক্তাই এলাকার ফাইভ স্টার গলিতে ‘নাজিম বাংলা সেমাই’ কারখানার খোঁজ পায়। মোহাম্মদ মিয়া বিল্ডিং নামে একটি আবাসিক ভবনের নিচতলায় কারখানার অবস্থান।

সেখানে চুল্লি জ্বালিয়ে আগুনের ঝুঁকি নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই বানানো হচ্ছিল। ভবনের মালিক মো. মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ম্যাজিস্ট্রেট এবং কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে দেন। এদিকে চাক্তাইয়ে বেশ কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কারখানায় চার-পাঁচজন করে নারী শ্রমিক কাজ করছেন। তৈরি করা সেমাই চটের বস্তার ওপর শুকাতে দিয়েছেন বস্তা যেখানে বিছানো হয়েছে, সে স্থানগুলো ময়লা আবর্জনায় ভরা। সেখানে মাছি ভনভন করছে। সেমাই তৈরির কারিগরেরা নোংরা পায়ে চটের উপর দিয়ে হেঁটে সেমাই উল্টে পাল্টে দিচ্ছেন।

কয়েকটি কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ নেই। কারখানা বন্ধ। কারখানার পাশে গামলায় রাখা আছে খামি। খামির ও বাসি পানির কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। প্রায় কারখানায় শ্রমিকদের দেখা গেছে, শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। খামি তৈরি করার সময় ঘামগুলো খামিরের সাথে পড়ে মিশে যাচ্ছে। সেমাইয়ের রং আকর্ষণীয় হওয়ার জন্য তাতে দেয়া হচ্ছে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল।

Powered by