বাংলাদেশ

মানুষের কাছে অর্থ নেই, গায়ক এনে তিনি গান শুনছেন : মির্জা ফখরুল

  প্রতিনিধি ৩০ মার্চ ২০২২ , ৫:১৯:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছে, দৌড়াচ্ছে। কারণ তার নিত্যপ্রয়োজনী জিনিসপত্র কেনার জন্য যে অর্থ দরকার, সেই অর্থ তাদের কাছে নেই।

তিনি বলেন, চারদিকে নিত্যপণ্যের এত দাম বাড়েছে। আর ওই সময় আমরা কি দেখছি, ভারত থেকে বিখ্যাত গায়ক এনে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) গান শুনছেন এবং কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও কারা নির্যাতিত সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর কারামুক্তি উপলক্ষে এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

টিসিবির ন্যায্য মূল্যের কার্ড আওয়ামী লীগ নেতাদের দেওয়া হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খুব জোর গলায় বলা হচ্ছে, এক কোটি কার্ড দেওয়া হয়েছে গরিব মানুষদের। আজকে পত্রিকায় দেখতে পারবেন, আমার ঠাকুরগাঁয়ে যাকে কার্ড দিয়েছে সে হচ্ছে আওয়ামী লীগের, মহিলা লীগের সভানেত্রী এবং তার দোতালা বাড়ি আছে। আর তার পাশেই গরিব মানুষ যার চালও নেই বাস করার জন্য ঘরও নেই। সে কোনো কার্ড পায়নি। এই অবস্থা গোটা দেশের।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে এখন একটা ভয়াবহ অবস্থা চলছে। এত খারাপ অবস্থা কখনো দেখিনি। এখানে কোনো রকমের কোন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ন্যূনতম স্বাধীনতা বোধ, একজনের সঙ্গে আরেক জনের সৌজন্য নিয়ে কথা বলা সেটা পর্যন্ত চলে গেছে। হবে না কেন? যারা চাকর তারা যদি মালিক বনে যায়, তখন তো সেটা সেই অবস্থায় দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, আজকে দেশে সেই অবস্থা হয়েছে। এমন এমন কথা এমন এমন লোক বলছে যাদের জীবন চলে জনগণের টাকায়, যাদের বেতন হয় জনগণের টাকায়, তারা মালিক হয়ে বসে আছে।

সাংবাদিকদের ওপর অত্যাচার নতুন না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আসলে যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা সুযোগ পেলেই সত্য কথা লিখেন, তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের নির্যাতন করেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেন। অনেক সময় তাদের কেটে টুকরো টুকরো করে ভাসিয়ে দেন। এখন যে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ হচ্ছে, কয়েকজন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছে। সাগর-রুনির হত্যাকারীদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গণমাধ্যম কর্মী আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, আইনটা কারা করবে? আইনটা সাংবাদিকরা করছে না। আইনটা করছে পার্লামেন্টের সদস্যরা। যারা বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে, তারা আইন তৈরি করবে আপনাদের জন্য, গণমাধ্যমের জন্য। সেটা কি অবস্থায় দাঁড়াবে আমরা জানি।

তিনি আরও বলেন, উপাত্ত সংরক্ষণ আইন। নতুন একটা বিল আসতেছে। ৩৪ পৃষ্ঠার একটা খসড়া দিয়েছে। কিছুদিন আগে দিলো বিটিআরসি কন্ট্রোল করবে সোশ্যাল মিডিয়া। বক্তব্য গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। সোশ্যাল মিডিয়াকে কি করে কন্ট্রোল করা যায় তারও একটা আইন আসছে। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে এটাকে একটা কর্তৃত্ববাদী বললে ভুল হবে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ। এখানে কথা বলার তো স্বাধীনতা নেই, কথা বললে শিরচ্ছেদও হতে পারে এরকম একটা অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আমাদের এখন কাজ করতে হবে, সরাতে হবে এবং বিচার বিভাগকে বাধ্য করতে হবে ন্যায় বিচার করতে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করি।’

নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল্লাহ, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান আকন্দ, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ডিউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, কবি আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by