দেশজুড়ে

মিরসরাইয়ে ৫০টি অবৈধ লেভেলক্রসিং কাঠ পাচারের নিরাপদ রূট, লেভেলক্রসিংই যেন মৃত্যুফাঁদ!

  প্রতিনিধি ৯ আগস্ট ২০২১ , ৫:৫৮:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

আশরাফ উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম):

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্টগ্রাম অংশের মিরসরাই উপজেলার অরক্ষিত ৩০ কিলোমিটারজুড়ে প্রায় অর্ধশত লেভেলক্রসিংই যেন মৃত্যুফাঁদ।

এসব ক্রসিং এ একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও নেয়া হচ্ছে না কার্যকর পদক্ষেপ। ৫০টি অবৈধ লেভেলক্রসিং কাঠ পাচারের নিরাপদ রূট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

জানা গেছে, মিরসরাইয়ের ধুমঘাট রেলসেতু থেকে দক্ষিণের বারৈয়াঢালা পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অন্তত ৫০টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং। চোরাই কাঠ ও পণ্য পরিবহণের স্বার্থে চোরাকারবারীরা এসব ক্রসিং তৈরি করেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় লোকজন।

মিরসরাইয়ের চিনকির আস্তানা রেল স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, মিরসরাই এলাকার ৩০ কিলোমিটার রুটে কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত লেভেল ক্রসিং রয়েছে মাত্র সাতটি। এর বাইরে মানুষের তৈরি অবৈধ ক্রসিং তৈরি হয়েছে অনেক। এগুলো বন্ধে বারবার কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিলেও প্রভাবশালীদের কারণে কার্যকর হয় না।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈধ লেভেল ক্রসিং গুলোর মধ্যে বারইয়াহাট, বিএসআরএম গেইট, মহামায়া ব্যতীত বাকি চারটিতে কখনো গেইটম্যান নিয়োজিত থাকে না। অবৈধ ক্রসিংগুলো দিব্যি ব্যবহার করছে চোরাকারবারী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।

 

গতকাল সোমবার (৯ আগস্ট) সকালে মিরসরাই-ফটিকছড়ি সদর সংযোগ সড়কের আমবাড়ীয়া লেভেল ক্রসিং এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় এখানে গেট নেই গেটম্যানও নেই। অথচ এ সড়কে প্রতিদিন অসখ্য যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল করে।

অনুমোদিত সাতটি লেভেল ক্রসিং এর মধ্যে সবচে গুরুত্বপূর্ণ বারইয়াহাট লেভেল ক্রসিং। এখানে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনায় একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
মিরসরাইয়ের চিনকি আস্তানা রেলওয়ে স্টেশনের ইনচার্জ মঈনুল হুদা জানান, একসময় বারইয়ারহাট লেভেলক্রসিং এ ইন্টারলগিং সিস্টেম ছিলো। কিন্তুু ডাবল লাইন বসানো সময় নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইট সমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়নে ২০১৫ সালে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। যার মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুন। প্রকল্পটির আওতায় মিরসরাইয়ের বৈধ লেভেল ক্রসিং গেইটগুলো ইন্টারলগিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী-৩ (ঢাকা) ও পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের লেভেল ক্রসিং গেইট পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শেখ নাইমুল হক।

তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকলেও তার আগে ২০১৯ সালের নাগাদ বেশিরভাগ লেভেলক্রসিং ইন্টারলগিং সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায় রেলওয়ের এ কর্মকর্তা ইন্টার লগিং সিস্টেম চালু করার কথা জানালেও এখানে কোথাও কোন লেভেল ক্রসিং এ ইন্টারলগিং সিস্টেম চালু হয়নি।

সর্বমোট ৫৭টি লেভেলক্রসিং এর মধ্যে ৫০টি লেভেলক্রসিং অবৈধ। এসব অবৈধ ক্রসিং দিয়ে প্রতিরাতে সংরক্ষিত বনাঞ্জলের কাঠ পাচার করছে চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীরা। চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে কোন প্রকার প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন ব্যাপরোয়া হয়ে উঠছে তারা। চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by