আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন পরীক্ষা স্থগিত

  প্রতিনিধি ১৩ অক্টোবর ২০২০ , ১২:০২:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ অনলাইন:

মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল স্থগিত করা হয়েছে। ট্রায়াল দেওয়া একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসনের কর্তৃপক্ষ। যদিও তার দেহে কি ধরনের অসুস্থতা দেখা দিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ভ্যাকসিন পরীক্ষার দৌঁড়ে প্রতিষ্ঠানটির জন্য এটি বড় ধাক্কা।

জনসন অ্যান্ড জনসনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‌‘এক স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা আমাদের তৃতীয় দফার ট্রায়ালসহ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সব ধরনের ট্রায়াল সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করেছি।’

 

গত মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করে এই প্রতিষ্ঠান। সেই সময় জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে জনসনের এই ভ্যাকসিন শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।

ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের একটি অন্তবর্তীকালীন ফলও সেই সময় প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় দুই ধাপেই আশানুরূপ ফল এসেছে। দু’টি ধাপেই দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে কার্যকর। কিন্তু সম্প্রতি এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা এক স্বেচ্ছাসেবী হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।

শুধু তাই নয়, নতুন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগের জন্য যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান নতুন করে খতিয়ে দেখতে একটি নিরপেক্ষ সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জনসন অ্যান্ড জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই স্বচ্ছাসেবীর অসুস্থ হওয়ার খবর প্রকাশ হতেই ট্রায়াল প্রক্রিয়া স্থগিত করতে গবেষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

 

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ওই স্বেচ্ছাসেবীর পরিচয় সংক্রান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া ওই স্বেচ্ছাসেবীর অসুস্থতা সম্পর্কিত তথ্য যাচাই না করেই কিছু বলা যাচ্ছে না।

গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কারও মধ্যে দুর্বলতা, অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের দুই শতাধিক স্থান ছাড়াও আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, পেরু এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশাল পরিসরে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাচ্ছিল জনসন অ্যান্ড জনসন।

 

এর আগে এক স্বেচ্ছাসেবীর দেহে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল। পরে অবশ্য স্বস্তির খবর দেয় অক্সফোর্ড। আবারো শুরু হয় ট্রায়াল প্রক্রিয়া। চলতি বছরের মধ্যেই সম্ভবত এসে যাবে করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন। ৬ মাস অথবা তারও আগে ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে একটি সূত্র। বর্তমানে এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চলছে। যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন সংক্রান্ত জয়েন্ট কমিটি একটি বিশেষ প্রটোকলের উন্নয়ন করেছে। এতে বলা হয়েছে, যে কোনো অনুমোদিত ভ্যাকসিন প্রথমেই ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের দেওয়া হবে। এছাড়া যাদের অন্য কোনো রোগ রয়েছে বা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের দেওয়া হবে। তারপর থাকবেন পঞ্চাশোর্ধ্বরা। সবার শেষে তরুণ-তরুণীদের দেওয়া হবে এই ভ্যাকসিন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রেজেনেকার যৌথ উদ্যোগে করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের শেষের দিকেই হয়তো অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেবে দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by