রাউজানে আখের বাম্পার ফলন

চট্টগ্রামের রাউজানের বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। আখ চাষে করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কম খরচে অধিক লাভের সম্ভাবনা থাকায় অনেকে ঝুঁকছেন এই আখ চাষে। চলতি বছর রাউজান উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩০ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের আখ চাষ হয়েছে।

হেক্টর প্রতি আখের উৎপাদন হয়েছে ১১০ টনের অধিক। প্রতি হেক্টরে খরচ বাদ দিয়ে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা উপার্জন হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে আখচাষে আগ্রহ বাড়ছে। খরচ কম ও কম সময়ের ব্যবধানে লাভ বেশি হওয়ায় মূলত কৃষকরা আখচাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে উপজেলার গহিরা, চিকদাইর, ডাবুয়া, কদলপুর, নাতোয়ান বাগিচা, খলিলাবাদ এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে আখের চাষ করেছে কৃষকরা। সারি সারি করে দাঁড়িয়ে থাকা আখ ক্ষেতগুলো নজর কাড়ছে অনেকের। বাজারে ভালো দামে আখ বিক্রি হওয়ায় আখ চাষীরা খুশি। খুচরা ও পাইকারী দু’ভাবেই আখ বিক্রি করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানান, চলতি মৌসুমে হলদিয়া ইউনিয়নে ৮ হেক্টর, ডাবুয়া ইউনিয়নে ৬ হেক্টর, চিকদাইরে ২ হেক্টর, গহিরায় ২ হেক্টর, পৌরসভায় ২ হেক্টর, নোয়াজিষপুরে ২ হেক্টর, রাউজান ইউনিয়নে ২ হেক্টর, কদলপুরে ২ হেক্টর, পশ্চিম গুজরায় ২ হেক্টর জমিতে আখচাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে আখচাষে খরচ হয় ১ লাখ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বালাই ব্যবস্থাপনা ঠিক থাকলে আখ বিক্রি করে আয় হয় হেক্টরে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা।

পশ্চিম গহিরার দলইনগর এলাকার আখচাষী নুরুল আলম জানান, চলতি মৌসুমে দুই কানি জমিতে আখচাষ করতে তার দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সর্বমোট ক্ষেত থেকে পাচ লাখ টাকার আখ বিক্রির লক্ষ্য তার।
সদর ইউনিয়নের আখচাষী মো. শফি বলেন, প্রতি পিস আখ ৩০ টাকা থেকে ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। অনেক ক্রেতা ক্ষেত থেকেও পছন্দ করে কিনে নেয়। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং ক্ষেতে আখ নষ্ট না হলে ভালো বিক্রি দামে হয়।

আখ চাষী মঞ্জু, জাহাঙ্গীর ও আবু তালেব জানান, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ফলে আখ চাষে খরচ অনেক বেড়েছে। আখ চাষ করতে কৃষি অফিসের কোনো সহযোগিতা না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তারা বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে প্রতিবছর আখচাষে বিপ্লব ঘটবে রাউজানে।

রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মাসুম কবির জানান, আগামীতে উন্নত জাতের আখচাষে কৃষকরা যাতে আরো বেশি লাভবান হয় সেজন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এবারও রাউজানে ভালো আখ চাষ করা হয়েছে। আশাকরি কৃষকরা লাভবান হবেন।