দেশজুড়ে

রাজশাহীতে দিন-দুপুরে ৩০ লক্ষ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ২৩ এপ্রিল ২০২২ , ৮:০৬:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দিন দুপুরে ভাড়াটে মাস্তান দিয়ে পুকুর থেকে ৩০ লক্ষ টাকার মাছ লুট করার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের ঝিকড়াপাড়া বামনাইল গ্রামে ঘটে। প্রকাশ্যে দিবালোকে মাছ লুটের ঘটনা গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশকে অবগত করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে মাছ ধরার জাল, হাঁড়ি ও ট্রলি জব্দ করে নিয়ে যায়।
জানা যায়, ২০১৬ সালে পবা উপজেলার দারুসা হুজরীপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বাবুর সঙ্গে প্রায় ৩৮ বিঘার পুকুর ১০ বছরের খনন চুক্তিপত্রের লিজ গ্রহণ করে ব্যবসা শুরু করে মহানগরীর রাজপাড়া থানার কোর্ট হড়গ্রাম বাজার আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল করিম বিশ্বাস।

দুজনে প্রথম দুই বছর ব্যবসা চলমান অবস্থায় ২০১৭ সালের দিকে তাদের মধ্যে মতের মিল না হওয়ায় বাবু তার ব্যবসায়ী পার্টার আব্দুল করিমের সঙ্গে আলোচনা করে (বাংলা সন ১৪২৫ হতে ১৪২৮ ৩১ বৈশাখ) পর্যন্ত চাষাবাদ করে ভোগ দখল করে এককভাবে ব্যবসা করবে তার ব্যবসায়ী পার্টার আব্দুল করিম বিশ্বাস এই মর্মে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি অনুযায়ী প্রথম বছর অতিবাহিত অবস্থায় বাবু তার আর্থিক সমস্যা ও সাংসারিক প্রয়োজনে পুনরায় আব্দুল করিমের বিশ্বাসের কাছে লীজ উপ-সত্ব বাংলা সন ১৪২৯ হতে ১৪৩২ সনের চৈত্র মাস ৪ বছর মেয়াদী ১৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বিনিময় মূল্য স্বরুপ ভোগ দখল করার লিখিত চুক্তি করে।

মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল করিম বিশ্বাস জানান, তার ব্যবসায়ী পার্টানের সাথে এসব চুক্তি থাকা সত্তে¡ও প্রায় দেড় থেকে দুই মাস আগে হতে বাবু হঠাৎ করে আমার কাছে লোক মারফত ও মাস্তান দিয়ে পুকুর দখল করার হুমকি প্রদান করতে থাকে। এতে তার অবৈধ আবদার ও হুমকিতে আমি কর্নপাত না করে গত ২০ এপ্রিল আমার নিজ পুকুরে মাছ ধরতে গেলে পুলিশ পাঠিয়ে মাছ ধরায় বাঁধা প্রদান করে।

এর একদিন পরেই অর্থাৎ গত ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাবু তার ভাড়াটে মাস্তান ও ক্যাডার দারুশা হুজরিপাড়া এলাকার মেজারুলকে সঙ্গে নিয়ে আরো প্রায় ৩০ জনের বাহিনী নিয়ে ৩৮ বিঘার পুকুরের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা মূল্যের মাছ লুটপাট করে তার অন্য পুকুরে নিয়ে যায়।

আব্দুল করিম আরো জানান, মাছ লুটপাটের কথা স্থানীয় জনগণের মাধ্যমে জানতে পেরে মোবাইল ফোনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলু ও ইউপি সদস্য সেলিমকে জানালে তারা থানা পুলিশকে অবগত করে। পরে থানার ওসি ঘটনাস্থলে কাকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রকে জানালে পুলিশ পরিদর্শক কবির হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছলে তারা পুকুর হতে পালিয়ে যায়। এ সময় পুকুরপাড় হতে মাছ ধরার জাল, হাঁড়ি ও মাছ বহনের জন্য ট্রলি জব্দ করে।
কাকনহাট পুলিশ তদন্তের ইনচার্জ (পরিদর্শক) কবির হোসেন সেই দিনের ঘটনায় পুকুরপাড় হতে জাল, হাঁড়ি ও ট্রলি জব্দ করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তাদের দুই জনের মধ্য বিরোধ আছে। এটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বসার কথা রয়েছে বলে জানান।

এই বিষয়ে রিশিকুল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রথমে বাবু আমার কাছে অভিযোগ দিলে করিমকে তার কাগজপত্রদি নিয়ে আসতে বললে করিম সবকিছু দিয়ে যায়। পরে বাবুকে মিমাংসা করার দিন দিলে সে কাগজপত্র নিয়ে আর হাজির হয়নি। গত ২১ এপ্রিল বাবু সন্ত্রাসী কায়দায় দিন-দুপুরে মাছে লুটপাট করছে জানতে পেরে আমি পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ মাছ মারার জাল, হাঁড়ি ও ট্রলি জব্দ করেছে বলে জানান।

এই বিষয়ে বাবুর মুঠোফোনে কল ও এসএমএস দিয়ে (শনিবার ২৩ এপ্রিল) বারবার যোগাযোগ করে কোন সাড়া না পাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, বাবু ও করিমের সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে বিরোধ আছে। বাবু মাছ লুটপাট করছে এমন খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে জাল, হাঁড়ি ও ট্রলি জব্দ করা হয়েছে। তাদের এই বিরোধের মিমাংসার জন্য উভয় পক্ষর বসার কথা আছে বলে জানান।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by