রাজশাহী

শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে পোকাশনাক্তে আলোক ফাঁদ

  প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২১ , ৬:৫৫:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মোকামতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি :

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় কৃষকদের কাছে ধীরে ধীরে আগ্রহ বাড়ছে আলোক ফাঁদের সাহায্যে পোকামাকড়ের উপস্থিতি শনাক্তকরণ। ফসল ক্ষেতে সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে আলোক ফাঁদ অন্যতম। এজন্য কৃষকরা পোকাশনাক্তে ধানক্ষেতে এই আলোক ফাঁদ স্থাপন করছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি বছরে ২০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে অল্প কিছু পোকামাকড় ও রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থাকলেও ধানের সার্বিক অবস্থা ভালো। ধান ক্ষেতে আলোর ফাঁদ স্থাপনের মাধ্যমে মূলত পোকামাকড়ের উপস্থিতি জরিপ করা হয়।

কৃষকরা জানায়, এ সময় ধান ক্ষেতে পোকামাকড় বেশি দেখা দেয়। এরমধ্যে অধিকাংশ পোকাই ধানের ক্ষতি করে। সেজন্য ফসলে কোন পোকার উপস্থিতি কেমন তা জানতে সন্ধ্যায় ফসলের জমিতে ফাঁদ হিসেবে বাতি জ্বালানো হয়। বাতির নিচে রাখা হয় গামলা ভর্তি পানি। পানির ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে পানির সাথে থাকে ডিটারজেন্ট বা সাবানের ফেনা। বাতি জ্বালালে পোকামাকড় সেদিকে আকৃষ্ট হয়। এর

পর সেসব পোকা গিয়ে পড়ে বাতির নিচে রাখা গামলার ভেতরে। গামলার ফেনায় গিয়ে বসলে বা পড়লে পোকামাকড় উঠতে পারে না। সেখান থেকেই ধানের জন্য ক্ষতিকর এবং উপকারী পোকা শনাক্ত করা হয়।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রামে আলোক ফাঁদ স্থাপন করে কৃষকদের ধানের পোকামাকড়ের উপস্থিতি শনাক্ত করে হাতে কলমে শিখাচ্ছেন দেউলী ইউনিয়নে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান, মাহমুদুল হাসান এবং রাকিব হাসান।

ওই গ্রামের কৃষক মো. জিল্লুর রহমান (৪৫) বলেন, অনেক আগে থেকেই আমরা ধানের পোকামাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কোন পোকার আক্রমণ বেশি হয়েছে তা আমরা বুঝতাম না। অনেক সময় না বুঝেই আমরা কীটনাশক ব্যবহার করি। কিন্তু আলোক ফাঁদের সাহায্যে আমরা বুঝতে পারছি কখন কোন পোকা জমিতে বেশি আক্রমণ করে এবং সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি।

ওই ব্লকে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. সাইফুর রহমান বলেন, ধানক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের পোকা থাকে। কিন্তু পোকাগুলি উপকারী নাকি ক্ষতিকর সেটা জানার জন্য স্থাপন করা হয় আলোক ফাঁদ। কৃষকদের এই ফাঁদের সাহায্যে ক্ষতিকর এবং উপকারী পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করে ক্ষতিকর পোকার সংখ্যা শতকরা বেশি থাকলে প্রথমে বিভিন্ন জৈব পদ্ধতি প্রয়োগের পরামর্শ প্রদান করা হয়, তবে এতে ফলাফল ভালো না আসলে পরবর্তীতে রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল মুজাহিদ সরকার বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চলতি আমন ধানের বালাই দমনে দলীয় আলোচনা, উঠান বৈঠক, ব্যাক্তিগত যোগাযোগর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরামর্শ প্রদান ও বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি বøকে নিয়মিত আলোক ফাঁদ স্থাপন করে পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে।

 

 

Powered by