দেশজুড়ে

‘সরকারি শিশু পরিবারের’ ২ শিশুর মৃত্যু

  প্রতিনিধি ১১ অক্টোবর ২০২৩ , ৬:২৩:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

‘সরকারি শিশু পরিবারের’ ২ শিশুর মৃত্যু

শরীয়তপুর সরকারি শিশু পরিবারের ২ শিশু পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে শহরের ধানুকা এলাকায় অবস্থিত সরকারি শিশু পরিবারের পুকুরে এই ঘটনা ঘটে। 

মারা যাওয়া ওই দুই শিশুর নাম সাদেকুল ইসলাম (১২) ও মো. সোহেল বয়াতি (৯)। তাদের মধ্যে সাদেকুল গোসাইরহাট উপজেলার আলোওয়ালপুর ইউনিয়নের মাঝের চর গ্রামের মৃত মাহমুদুল হাসানের ছেলে ও সোহেল বয়াতি ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গংগেস কাঠি গ্রামের মৃত আলি আহমেদ বয়াতির ছেলে।

নিহতদের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুরে অন্যান্য শিশুরা শ্রেণিকক্ষে চলে গেলে সোহেল ও সাদিকুল সবার অগোচরে সরকারি শিশু পরিবারের অস্থায়ী টিনসেড ভবনের পেছনের পুকুরে গোসলে নামে। এসময় তারা সাঁতার না জানায় ডুবে যায়। পরে সেখানকার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক শিশু দুটির খোঁজ না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে পুকুর ঘাটে তাদের জামাকাপড় দেখে সকলে মিলে পুকুরের পানিতে নামলে দুজনকে একসঙ্গে উদ্ধার করা হয়। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সাদিকুল ইসলামের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুলাভাই মারা যাওয়ার পর ভাগ্নেকে গত মাসে শিশু পরিবারে দেওয়া হয়। দুপুরের দিকে সেখান থেকে মোবাইলে ফোন করে আমাকে হাসপাতালে আসতে বলে। আমি হাসপাতালে আসার পরে জানতে পারি আমার ভাগ্নেসহ আরেক শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষ যদি শিশুদের ঠিকঠাক ভাবে দেখাশোনা করত তাহলে আমার ভাগ্নে আজ বেঁচে থাকত। 

সরকারি শিশু পরিবারের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক আ. মান্নান হাওলাদার বলেন, সব বাচ্চারা ক্লাস রুমে চলে গেছে। আমি সাদেকুল ও সোহেলকে দেখেছি বারান্দায় খেলতে। এরপর আমি অফিসে গিয়ে কাজ করি। কাজ শেষে ফিরে এসে ছেলে দুইজনকে দেখতে না পেয়ে বাবুর্চির কাছে জিজ্ঞাসা করি। সে জানায় তাদের দেখেনি। পরে স্যারকে জানিয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। কোথাও খুঁজে না পেয়ে পুকুর পাড়ে গেলে গামছা, সাবান ও কাপড় দেখতে পাই। পরে সবাই পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি করলে একসঙ্গে দুইজনকে পাওয়া যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বাচ্চাদের উদ্ধারকারী আ. খালেক বলেন, আমরা এই শিশু পরিবারের ভেতরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করি। হঠাৎ দেখি স্যাররা দুইজন বাচ্চাকে খুঁজছেন। পরে আমাকেও বলে একটু খুঁজতে। আমি পুকুরে পানিতে নেমে পরি। কিছুক্ষণ খোঁজার পরে দুইজনকে একসঙ্গে পাই।

নিহত সোহেল বয়াতীর ফুপাতো বোন মাকসুদা বলেন, সোহেলের মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। ওর জন্য যে কেউ কান্না করবে এমন কোনো কাছের লোক নেই। কয়েক মাস আগে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ওকে সরকারি শিশু পরিবারে দেওয়া হয়। পরে আজ মোবাইলে জানতে পারি আমার ভাই মারা গিয়েছে। আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মানসুরা ইসলাম বলেন, পানিতে পড়া দুটি শিশুকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে তাদেরকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। 

এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by