দেশজুড়ে

সাংবাদিকদের সাথে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

  প্রতিনিধি ২২ আগস্ট ২০২৩ , ৭:২৩:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান হিসেবে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল যোগদানের প্রায় চার মাস পর চট্টগ্রামে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে প্রথমবারের মতো মতবিনিময় করলেন রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের
কনফারেন্স রুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।


মতবিনিময় সভার শুরুতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে আপনাদের সাথে আজ একত্রিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত বোধ করছি। আজকের এই অনুষ্ঠানে আমি মূলত আপনাদের সাথে পরিচিত হতে চাই। সেই সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবস্থা, অগ্রগতি ও সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়নের সুসংবাদ ও শুভ বার্তা
আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর নিকট উপস্থাপন করতে চাই।


পরে বন্দর চেয়ারম্যান উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এতে বলা হয়, দেশের বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ এবং কন্টেইনারজাত পণ্যের ৯৮শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই পরিবাহিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাচ্ছে। ১০ মিটার ড্রাফট ও ২শ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো, ইউরোপের সাথে সরাসরি জাহা চলাচল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, বহির্নোঙরের আওতা বৃদ্ধি, ভিটিএমআইএস, ডিজিটালাইজেন, কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অত্যাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজন বন্দর সক্ষমতা বৃদ্ধির কয়েকটি উদাহরণ।


লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টিইইউএস। জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ মেঃটন। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪২৫৩টি। ২০২২-২৩ সালে ২টি ৫০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল ক্রেন, ২টি ১শ টন ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল ক্রেন, ৬টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ও ৪টি কিউজিসি এবং ২টি কনটেইনারের মোভার বন্দরের বহরে যুক্ত হওয়ায় কার্যক্রমের গতি বেড়েছে বহুলাংশে। সে মাত্রাকে আরও বেগবান করতে ৯১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৪টি ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে, যা যুক্ত হলে আমুল বদলে যাবে বন্দরের গতিময়তা।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বন্দরের বিল পরিশোধ, পোর্ট রিলিজ অর্ডার ও কার্ট টিকেট ইস্যু করাসহ পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। নির্ভুল, সহজ ও দ্রুততম সময়ে কাজ সম্পাদন সম্ভব হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনের স্বীকৃতিও পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের সিস্টেম। সফটওয়্যারের মাধ্যমে মালামাল খালাসের আগে মাশুল আদায়ে নিশ্চিত হওয়ায় আর্থিক স্বচ্ছতার পাশাপাশি আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা আগের চাইতে কম সময়ে পণ্য খালাস করতে পারছেন। বন্দর ব্যবহারকারীরা ঘরে বসেই অনলাইনে ফি ও চার্জ পরিশোধ করতে পারছেন। এলসিএল কনটেইনারের পণ্য স্টাফিং, আনস্টাফিং ও খালাসের প্রকিয়া সহজতর করতে টার্মিনাল অপারেটিং সিস্টেম (টস) বাস্তবায়ন করেছে বন্দর। এ ছাড়া জাহাজ বার্থিংয়ে স্বচ্ছতা আনতে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল বার্থিং সিস্টেম।


নিরাপত্তা চট্টগ্রাম বন্দরের অন্যতম অনুষঙ্গ দাবি করে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর একটি আই এসপিএস কমপ্লায়েন্ট বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের সংরক্ষিত ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৯৮ শতাংশ এখন সিসিটিভি মনিটরিংয়ের আওতায়। অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে বন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিটে রয়েছে ফায়ার ফাইটিং ফোম টেন্ডার, রেসকিউ ভেহিক্যাল, রিকভারী ভেহিক্যাল। এছাড়া কেমিক্যাল ফায়ার ফাইটিংয়ের জন্য একটি হাজমত টেন্ডার, ২টি র‍্যাপিড ইন্টারভেনশন ফায়ার ফাইটিং ভেহিক্যাল ও ৪টি ফায়ার পিকআপ সংযোজনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ফায়ার হাইডেন্টের আওতায় আনা হচ্ছে পুরো বন্দর এলাকাকে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরকে নিরাপদ বর্হিনোঙর হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক পাইরেসি মনিটরিংকারী প্রতিষ্ঠান রিক্যাপ।


মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by