দেশজুড়ে

সাদামাটা ইফতারে হিমশিম খাচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা

  প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২৪ , ৭:৪২:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

সাদামাটা ইফতারে হিমশিম খাচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা

বান্দরবানে সরকারি কলেজ ও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেলার ৭ টি উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা হতে অনেক ছাত্র উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ হোস্টেল বা আবাসিক এলাকায় মেস করে ৪ থেকে ৫ জন ছাত্র একসাথে থাকে।

একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মাসিক ইনকাম থেকে প্রতিমাসে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য ৫-৬ হাজার টাকা পাঠানো হয়,যা দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর টিউশন খরচ,বাসা ভাড়া,কলেজের বেতন সহ তার নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল খরচ মেটাতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। তার উপর রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও থাকে একটু চড়া এছাড়া ইফতারের পেছনেও রাখতে হয় একটা বাজেট।

সংযম-সাধনা, আত্মশুদ্ধি আর ত্যাগের মাস পবিত্র মাহে রমজান। রমজানে বান্দরবান জেলা সদরে সরকারি কলেজের আবাসিক হোস্টেলের বাইরে বাসা ভাড়া করে মেস করে থাকছেন ২০-৩০ জন শিক্ষার্থী। অনেক শিক্ষার্থীই রমজান মাসে বাড়িতে চলে গেলেও পড়ালেখা আর বাড়তি হাত খরচের জন্য যারা টিউশনি করেন তারা থেকে গেছেন তাদের মেসে।

যাদের বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাদের ইফতারে রকমারি কোন ইফতারির উপস্থিতি নেই বললেই চলে,অনেকটা সাদামাটা ভাবে,মুড়ি, চানাবুট,পিয়াজু,বেগুনি আর এক গ্লাস ট্যাং এর শরবত এতেই হয় তাদের ইফতার। যার পেছনে খরচ হয় জন প্রতি ১০০ হতে ১২০ টাকা। যে শিক্ষার্থীদের পরিবার থেকেই মাসে খরচ দেয়া হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা তাদের এই বাড়তি খরচটাও অনেক সময় সামলাতে বেগ পেতে হয়।

বান্দরবান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড আর্মি পাড়া এলাকার একটি ভবনের মেসে থাকছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের কয়েকজন ছাত্র। বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নেন্স এন্ড ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র শাহরুখ আরমান বলেন বর্তমান বাজারের দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবার থেকে যে টাকা পাঠানো হয় সেই টাকা দিয়ে পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে হাতে তেমন কোন টাকা থাকে না,রমজান মাসে ইফতার করতেও কষ্ট হয়ে যায়।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র ইমাম হোসেন বলেন দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ব্যাচেলর ছাত্রদের খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে,পরিবার থেকে যা পাঠানো হয় তা দিয়ে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি প্রতিনিয়ত। বান্দরবান সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র তানভীর হাসান বলেন বাড়ি থেকে যে খরচ দেয় তা দিয়ে চলে না,বাসা ভাড়া,খাবার খরচ,কলেজের বেতন সব মিলিয়ে টিউশনি করেও যা পাচ্ছি তা দিয়েও সামলাতে পারি না।

তার উপর পারিবারিক চাপ,ইফতারি করতে গেলে ১০০-১২০ টাকা খরচ হচ্ছে, আগে যে খাবার ৬০ টাকা ছিল এখন তা ১০০ টাকা। প্রতিদিন সব মিলিয়ে ৩০০ টাকার মত আমাদের খরচ চেলে যাচ্ছে। আমরা তো আর সবাই কোটি পতির ছেলে না,মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান,এভাবে তো আর চলে না তাই মনে হচ্ছে চাকরি করতে হবে।

সংযম-সাধনা, আত্মশুদ্ধি আর ত্যাগের সিয়াম সাধনার এই মাসে আবাসিক মেসে থাকা ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে হতে পারে তাদের প্রতি আপনার ভ্রাতৃত্বের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। কোন সংস্থা বা সংগঠন এই রমজানের পুরো মাস জুড়ে আবাসিক হোস্টেল ও মেসে থাকা ছাত্রদের পাশে থাকবে, বাড়িয়ে দিবে সহযোগিতার হাত এমনটাই প্রত্যাশা।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by