দেশজুড়ে

সিংড়ায় বড়ই চাষে লাভ বেশি, বাড়ছে বরইয়ের চাষ

  প্রতিনিধি ১৮ মার্চ ২০২৪ , ৫:৪৪:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

সিংড়ায় বড়ই চাষে লাভ বেশি, বাড়ছে বরইয়ের চাষ

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিভিন্ন জাতের বরইয়ের আবাদ বাড়ছে। এর মধ্যে ভারতসুন্দরী ও কাশ্মীরি বলসুন্দরী উল্লেখযোগ্য। আগে বসতবাড়িতে বরই চাষ করে বাড়ির চাহিদা পূরণ করা হলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। তারা বলছেন, বরইগাছে রোগবালাই কম হয়। সেচের খরচও কম লাগে। এর ফলে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হচ্ছে তাঁদের।

তাছাড়া বাজারে এসব বরইয়ের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলায় ভারতসুন্দরী, কাশ্মীরি বলসুন্দরী, থাই ও আপেল জাতের বরইয়ের আবাদ হচ্ছে। প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা বরই চাষ করছেন, যা প্রতিবছর বাড়ছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার আয় হবে। উপজেলার ডাহিয়া, চামারী, হাতিয়ান্দহ ও লালোর ইউনিয়নে এসব বরইয়ের আবাদ বেশি হচ্ছে।

চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গুণগত মান, আকার, রং ও স্বাদ ভেদে প্রতি মণ বরই তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাগান থেকেই বরই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন মোকামে। এতে চাষিদের হয়রানি কমছে। প্রতি মণ বলসন্দুরী ৩ হাজার টাকা, ভারতসুন্দরী ৪ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। লালোর ইউনিয়নের আতাইকুলা ও চামারী ইউনিয়নের মহিষমারী গ্রামে বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বরইয়ের ভারে ডালপালাগুলো মাটিতে নুইয়ে পড়ার অবস্থা।

বাঁশ ও কাঠের খণ্ড দিয়ে ডালপালাগুলো উঁচু করে রেখেছেন বরই চাষিরা। পাঁকা বরই তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। অনেক বাগানের বরই এ সপ্তাহের মধ্যেই বাজারজাত করা হবে। চাষিরা বলেন, ১ বিঘা জমিতে ১৮০ থেকে ২২০টি চারা রোপণ করা যায়। ৮ থেকে ৯ মাসের মাথায় গাছ থেকে বরই পাওয়া যায়। পরের বছর গাছ কমাতে হয়। কারণ, গাছ কমলে ফলন বাড়ে। প্রতিটি গাছে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কেজি করে বরই পাওয়া যায়।

জমির ইজারা, শ্রমিক, সার-কীটনাশকসহ প্রতি বিঘায় প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়। পক্ষান্তরে বরই বিক্রি করা যায় গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার। লালোর ইউনিয়নের আতাইকুলা গ্রামে বরই চাষি মো. শামীম হোসেনের সাথে কথা হয় তার বাগানে। তিনি বলেন, এবছরই তিনি প্রথম বরই চাষ করেছেন। এতে তিনি লাভের আশা করছেন। আড়াই বিঘা জমিতে তার ৩৫০টি বলসুন্দরী ও ভারতসুন্দরী বরই গাছ রয়েছে। এতে তার সর্বমোট খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।

তিনি আশা করছেন ৩ লক্ষ টাকার বরই বিক্রি করতে পারবেন। বছরে ২০ হাজার টাকায় এ বছর তিনি ১৭ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে নানা জাতের বরইয়ের সঙ্গে পেয়ারা ও সরিষার আবাদ করেছেন। তিনি আরও বলেন, কৃষি কর্মকর্তারা আমাকে পরামর্শ দিয়ে থাকে। সে অনুযায়ী চাষাবাদ করছি। মহিষমারী গ্রামের মো. জাকারিয়া বলেন, বরই চাষ একটি লাভজনক ফসল। এক সঙ্গেই সব বরই পাঁকা শুরু হয়।

এই পাঁকা বরই সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই তাই বাধ্য হয়েই কম দামেই বিক্রি করতে হয়। আমের মতো বরই যদি বিদেশে রপ্তানি করা যায় তবে সবাই আরও বেশি লাভবান হবে। এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, উপজেলায় এ বছর ৩৫ হেক্টর জমিতে বরই আবাদ হয়েছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার আয় হবে। বরই চাষে খরচ কম হওয়ায় প্রতিবছর বাড়ছে এ আবাদ। বরই চাষিদেরকে কৃষিবিভাগ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা করে আসছি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by