সিলেট

সিলেটে চলছে ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন : সমস্যায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষজন

  প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২১ , ৬:৫৭:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

বাপ্পা মৈত্র, সিলেট:

সিলেটে মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত বুধবার সকাল ৬টা থেকে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। যা চলবে আগামী ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত। এ সময় পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে আসা যাবে না। বন্ধ সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস। গতকাল শুক্রবার লকডাউনের তৃতীয় দিন চলছে। অন্যদিকে সরকারি ছুটিও। সিলেট শহরটা যেন একেবারে ফাঁকা।

আজ রাস্তায় মানুষও কম এবং যানবাহনের তেম কোনো চাপও নেই। যারা বের হচ্ছে বেশির ভাগই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে। আবার অনেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বাসায় ফিরছেন। সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন কার্যকরভাবেই চলছে, প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। হাতেগোনা কিছু মানুষকে রাস্তায় দেখা গেছে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কেবল খাবার ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছিল।

পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। যারাই যাচ্ছেন, পুলিশ সবার কাছে ‘মুভমেন্ট পাস’ দেখতে চাচ্ছে। তবে গতকাল শুক্রবার নগরে বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বেড়েছে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও নগরে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল ছিল। লকডাউন বাস্তবায়নে সিলেটে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ তিন দিন ধরে সিলেট থেকে দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে, সেই সাথে কোন ট্রেন ছেড়ে যায়নি, কোন ট্রেন আসেনি।

সরেজমিনে নগরের মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, বাগবাড়ি, মেডিকেল রোড, নবাবরোড, শেখঘাট, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, তালতলা, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, জেলরোড, সেবাহানীঘাট, উপশহর পয়েন্ট, মেন্দিবাগ পয়েন্ট ঘুরে দেখা য়ায়, ‘সর্বাত্মক’ লকডাউনের প্রথমদিন থেকেই নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশ চেক পোস্ট বসিয়েছে।

এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় এবং রাস্তার বের হবার কারণ জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। যেসব পেশার মানুষ জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের চেকপোস্ট অতিক্রম করার অনুমতি দিয়ে, অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় বেরিকেড বসিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেসব রাস্তায় জরুরি সেবা সংস্থার কোনো যানবাহনও যেতে পারছে না, যেতে হচ্ছে বিকল্প রাস্তা দিয়ে।

সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও কুমারগাঁও বাস স্টেশন থেকে সিলেট বাইরে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারগুলো। কদমতলী এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে সিলেট থেকে কোন ট্রেন ছেড়ে যায়নি, কোন ট্রেন আসেনি। পাড়া-মহল্লার ছোট রেস্টুরেন্ট ও চা দোকানগুলোতে সন্ধ্যার পর সামাজিক দুরত্ব উপেক্ষা করে চলে জমজমাট আড্ডাও। কোনো কোনো এলাকাতে দিনের বেলায় অপ্রয়োজনীয় দোকানের সাটার নামিয়ে চলছে পণ্য কেনা-বেচা। কাঁচা বাজারের দোকানপাটে বিক্রেতা ও ক্রেতা কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। নি¤œ ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা জানান, কয়েক দিন পর পর লকডাউনের কারণে ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। এ ভাবে আরও কিছু দিন চললে বাঁচার মত পথ দেখছি না। করোনার প্রাদুর্ভাবে অনেক দিন ধরে ঠিকমতো কাজ মিলছে না।

যার ফলে ধার-দেনা বা ঋণ নিয়ে কোনোভাবে সংসার চালাতে হচ্ছে। এতে করে সংসার চালাতে দিনে দিনে বাড়ছে ঋণের বোঝা।

রিকশা চালক তাজুল মিয়া জানান, পেটের তাগিতে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি, এবারের লকডাউনে আগের মত সাহায্যও পাওয়া যাচ্ছে না। সংসারে চার বাচ্চা রয়েছে, আমাকে ঘরে বসে থাকলে কি ভাবে চলবে। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় এসেছি, তবে বেশি মানুষ না বের হওয়ায় কম ট্রিপ পাচ্ছি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by