বাংলাদেশ

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে রোববার বৈঠকে বসছে বিজিবি ও বিজিপি

  প্রতিনিধি ২৯ অক্টোবর ২০২২ , ৬:১২:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

সীমান্তে চলমান উত্তেজনা নিরসনে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার। আগামীকাল রবিবার (৩০ অক্টোবর) কক্সবাজারের টেকনাফে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে’র (বিজিবি) সঙ্গে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ’র (বিজিপি) ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার।

শেখ খালিদ বলেন, আড়াই মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। একাধিকবার বিজিপির কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে।

তবে পতাকা বৈঠকটি সীমান্তের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠানের তথ্য জানালেও এতে আরো কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে এবং দু’দেশের কতজন করে সদস্য অংশ নেবেন, তা বিস্তারিত জানাননি বিজিবির এই কর্মকর্তা।

জানা যায়, চলতি বছরের আগস্ট মাস থেকে সীমান্তে উত্তেজনা শুরু হয়। প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে, গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমারের ছোড়া দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। তবে বিস্ফোরিত না হওয়ায় কেউ হতাহত হয়নি।

এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া আরো দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে। একইদিন বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে উড়ে যায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার। যে কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়তে থাকে আতঙ্ক। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে।

এর মধ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর আবারো মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েকটি মর্টার শেল এসে পড়ে।। যার মধ্যে শূন্যরেখায় মর্টার শেল বিস্ফোরিত হয়ে মারা যায় এক রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আহত হয় আরো ৬ জন। যে কারণে সীমান্তের বাসিন্দারা অনেকেই বসতি ছেড়ে আশ্রয় নেন স্বজনদের বাড়িতে। সীমান্তে বারবার এমন কর্মকাণ্ডে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কয়েক দফা় কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ বন্ধ হতেই নতুন করে উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে শুরু হয় গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। তারপর নতুন করে আতঙ্ক শুরু হয় টেকনাফ সীমান্তে। এভাবে সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে চলতে থাকে গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ।

এরই মধ্যে গত ১০ অক্টোবর পরিস্থিতি দেখতে সীমান্তে আসেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। সীমান্ত পরিদর্শনের পাশাপাশি দেখেন বিজিবির কার্যক্রম। ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবাদলিপি পাঠানোর পাশাপাশি বিজিপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

বিজিবির মহাপরিচালক আরো জানিয়েছিলেন, সময় নির্ধারণ না হলেও পতাকা বৈঠকে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। তারপর গত ২৩ অক্টোবর নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নতুন করে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। যা দুদিন থেমে থেমে অব্যাহত থাকে। তবে এরপর থেকে আর শোনা যায়নি গোলাগুলির শব্দ।

এর মধ্যে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতে সীমান্তে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে সম্মত হয় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। পতাকা বৈঠকের জন্য রোববার মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল কক্সবাজারের টেকনাফে আসবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by