দেশজুড়ে

অস্তিত্ব সংকটে কমলনগর খাল

  jahangir liton Attachments6:22 PM (1 hour ago) to darpannews17, me, lbarta2025, s.uddinlxp, correspondent দখলে-দূষণে মৃত খালের উপর আর্বজনা। অস্তিত্ব সংকটে কমলনগরের চর ঠিকা খাল। লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৭:৩১:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

অস্তিত্ব সংকটে কমলনগর খাল

দখলে-দূষণে মৃত খালের উপর আর্বজনা। অস্তিত্ব সংকটে কমলনগরের চর ঠিকা খাল।

লক্ষ্মীপুর কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট বাজারের চরঠিকা খালটি দস্যুদের কবলে পড়ে বেদখল হয়ে পড়েছে। খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। বাজারের ময়লা আর্বজনা ফেলে খালের পানিকে দূষিত করা হয়েছে। এতে বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। প্রশাসনের হিসবে মতে শতাধিক দখলদারের কব্জায় রয়েছে খালটি। 

এদিকে খাল পাড়ের বসত বাড়িতে যাতায়াতের জন্য খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। খালের কোন কোন অংশ গিলে খেয়েছে দস্যুরা, কোন অংশ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। পরিণত হয়েছে নালায়। ফলে এক সময়ের স্বচ্ছ পানির খালটি এখন প্রায় মৃত। এতে বর্ষা মৌসুমেও জলবদ্ধতার দেখা দেয়। ব্যাহত হচ্ছে ফসলি জমির চাষাবাদ। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালীরা খালটি দখল করে সেটিকে মৃত বানিয়ে ফেলেছে। তারা বলছে, খালের উপর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পুনঃখনন করলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে। সেই সাথে উপকৃত হবে কৃষকরা।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, খালটি  অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কাজ হাতে নেওয়া হচ্ছে। 

জানা গেছে, ৮০’র দশকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে চরঠিকা এলাকায় খালটি খনন করে সরকার। পরবর্তীতে এটি চরঠিকা খাল নামে পরিচিত লাভ করে। তখন এ খালের পানি দিয়ে ওই অঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে কৃষি আবাদ হতো। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে বিস্তৃর্ণ এলাকার পানি নিষ্কাশন হতো এ খাল দিয়ে। কিন্তু গেলো ৪০ বছরের ব্যবধানে খালটি এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। 

ফজুমিয়ারহাট বাজার অংশে থাকা খালের উপর তৈরি হয়েছে অবৈধ স্থাপনা, আর উত্তর অংশে গড়ে উঠেছে বসতি। এতে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে খালটি। 

স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদ, নবী উল্যা, মিজান ও সিরাজ মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কমলনগরের একটি গ্রামকে শহর ঘোষণা করেছে সরকার। সেটি চরকাদিরা ইউনিয়নের চারঠিকা গ্রাম। কিন্তু এ গ্রামের নামে চরঠিকা খালটি এখন দস্যুদের কবলে। ফজুমিয়ারহাট বাজারের ময়লা আর্বজনা এ খালে ফেলা হচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে গোটা পরিবেশ। স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাজারের মধ্যে থাকা খালের উপর দোকানপাট নির্মাণ করে খালের জমি দখল করে নিয়েছে। বাজারের উত্তর-পূর্ব অংশে দখলদাররা ঘর বাড়ি তৈরি করে ফেলছে। এতে বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাটসহ মানুষের বাড়িতে পানি উঠে পড়ে। এ গ্রামকে শহরের রূপান্তর করতে হলে খালটি অবশ্যই দখলমুক্ত করতে হবে। 

নসম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরঠিকা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, খালের মধ্যে থাকা বাজারের ময়লা-আর্বজনা পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। খালের পাড় দিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটায় যায় না। নাক বন্ধ করে হাঁটতে হয়। 

সাবেক মাদরাসার শিক্ষক নুর নবীসহ অনেকে বলেন, এক সময় খালের পানি দিয়ে আমরা বোরো ধানের আবাদ করতে পারতাম। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে এখন এ খালে পানি ঢুকতে পারে না। খালের উপর বসত বাড়ির চলাচলের পথ তৈরী করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বোরো আবাদ হয় না। আবার বর্ষাতে খালের দু’পাড়ে থাকা ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। এতে আমন চাষাবাদও ব্যাহত হচ্ছে। তাই খালটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। 

কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল্লাহ মুরাদ বলেন, খাল দখল ও দূষণের কারণে প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দখল ও দূষণ মুক্ত হলে অন্তত এক হাজার হেক্টরের বেশি জমি বোরো ধানের চাষাবাদের আওতায় আসবে। 

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস রাইজিং বিডিকে জানান, খালের উপর থাকা শতাধিক অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযানে নামবেন তারা। খাল পুনঃখননের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

জাহাঙ্গীর লিটন, 

লক্ষ্মীপুর। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by