প্রতিনিধি ১১ এপ্রিল ২০২২ , ৬:১৭:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
আশরাফ উদ্দিন (মিরসরাই ) চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
মিরসরাইয়ের ১৫ নং ওয়াহেদ পুর ইউনিয়নের ১ নং গাছ বাড়িয়া ওয়ার্ডে অবস্থিত গাছ বাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক শত ছাত্র ছাত্রীদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জোর পূর্বক দোকান ঘর ও বাড়ি নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদ ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে বার বার অভিযোগ করেও রাস্তা উদ্ধার করতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভূক্তভোগিরা।
ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার রাসেল জানান, সীট নং পূর্ব গাছবাড়িয়া বিএস মূলে দাগ নং ১৮৩৫ অনুযায়ী ১৮ ফিট প্রসস্থ ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংযোগ থেকে গাছবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা। কিন্তু ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংযোগ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা ব্রিক সলিং থাকলেও আহম্মদ আলী মেস্ত্রী বাড়ি অংশে এসে রাস্তাটি চুরি হয়ে গিয়েছে। রাস্তা দখল করে নির্মান করেছে দোকান ঘর ও বসত বাড়ি।
এমন ভাবে স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে যে রাস্তার কোন নিশানাও নেই। রাস্তার অভাবে শত শত মানুষের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া গাছবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা রাস্তা না পেয়ে অন্যের বাড়ি ঘরের উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। একজন ওয়ার্ড মেম্বার হিসেবে স্থানিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন রাস্তা ব্যবহারকারীরা।
তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে দলিলাদি যাচাই করে দেখা যায় রেকর্ড অনুযায়ি রাস্তার বয়স শত বছরেরও বেশি। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে বিগত কয়েক বছরে আহম্মদ আলি মেস্ত্রী বাড়ির বাসিন্দা মৃত নুরুল আফছারের ছেলে জিয়া উদ্দিন মিন্টু (৩৫) জোর পূর্বক দোকান ঘর ও বসত বাড়ি নির্মান করে তার বোন ও ভাগিনাকে ভাড়ায় হস্তান্তর করেছে। রেকর্ড অনুযায়ী আর্মীটার দিয়ে মেপে রাস্তার জায়গা চিহ্নীত করে দোকান ঘর ও বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করা হলেও তা কর্ণপাত করছেনা তিনি। তিনি জনপ্রতিনিধি, স্থানিয় জনসাধারন, গণ্যমান্যব্যাক্তি ও পুলিশ প্রশাসন কাওকেই পাত্তা দিচ্ছেন না।
মিরসরাই থানা পরিচালিত নিজামপুর পুলিশ ফাড়ির উপপরিদর্শক এস আই রাকিব জানান, রাস্তা দখলের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযুক্ত স্থানে দোকান ঘর ও বসতবাড়ির স্থাপনা দেখতে পেয়েছি। যেহেতু জায়গা জমির অভিযোগের মিমাংসা পুলিশ করতে পারেনা তাই তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদ অথবা কোর্টের মাধ্যমে সমাধান করতে। তবে দখল বেদখলকে কেন্দ্র করে যাতে কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে থানা প্রশাসন থেকে।
স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল হুদা, শামীম আরা, জসীম উদ্দিন, হুমায়ুন কবির, নাজমুল হাসান, মমিন হোসেন, নুরুল মোস্তফা, মোহাম্মদ আলি, আব্দুল মান্নান সহ উপস্থিত ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শত বছর আগের ১৮ ফিট প্রশস্থ সড়কটির এক কিলোমিটারের মাথায় আমম্মেদ আলী মেস্ত্রী বাড়ীর মুখে ৪০ ফিট জায়গা অবৈধ দখল করে এমন ভাবে দোকান ঘর ও বসত বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে যে রাস্তটি দোকান ও বসত ঘরের পেটের ভেতরে চলে গেছে। এছাড়া টিনের বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একজন ব্যাক্তি কার ক্ষমতার বলে এতো বড় অন্যায় করে তার ক্ষমতার বড়াই দেখাচ্ছে আমরা জানতে চাই। পুরোগ্রামবাসী সড়কটির মেরামত চায় সড়কটির দখলকৃত অংশ উদ্ধার চায়।
ঘটনার স্থল সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় সড়কটির আহমেদ আলী মেস্ত্রী বাড়ি পর্যন্ত গিয়ে দোকানঘর ও বসতঘরে বিলিন হয়ে গেছে। দোকান ও বসত ঘরশেষে আবার শুরু। মাঝখানে প্রায় ৪৯ ফিট রাস্তা নেই। এবিষয়ে অভিযুক্ত জিয়া উদ্দিন মিন্টুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তা সীটে থাকলেও এটি কখনো রাস্তা হিসেবে ব্যবহার ছিল না। দোকান ঘর রাম্তার অংশে পড়েনাই। রেকর্ড অনুযায়ী রাস্তা ১৮ফিট রাস্তা ধরা হলে স্থাপনার কিছু অংশ রাস্তাুয় পড়ে।
স্থানিয় চেয়ারম্যান মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যাক্তিরা যদি টিহ্নীত করেদেন কতটুকু ছাড়তে হবে তাহলে সেই অনুযায়ী দখল ছেড়ে দিতে আমার আপত্তি নেই। এব্যাপারে আপনি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে পারেন, চেয়ারম্যান বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।
এ ব্যাপারে ১৫ নং ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ জানান, রাস্তার বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানলেও আমাকে লিখিত ভাবে এখনো কেউ জানায়নি। ওয়ার্ড মেম্বারকে দায়িত্ব দিয়েছি দলিল পত্র যাচাই করে রাস্তা দখল থাকলে সেটি উদ্ধারের ব্যাবস্থা নিতে।