বাংলাদেশ

স্বর্ণ শিল্প কুটির থেকে বৃহত্তর শিল্পে রূপ নেবে ভিশন সায়েম সোবহান আনভীরের

  প্রতিনিধি ১৩ মার্চ ২০২২ , ৮:১১:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বাজুসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলনে ডা. দীলিপ রায়

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি ও ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দীলিপ রায় বলেছেন, বাজুসের কেন্দ্রীয় সভাপতি, এশিয়ার বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দেশের বিকাশমান ব্যবসার আইকন সায়েম সোবহান আনভীর দেশের স্বর্ণশিল্পের উন্নয়নে ভিশন-মিশন নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে অনেক কাজ হয়েছে। এর মাধ্যমে আগামীতে স্বর্ণকে কুটির শিল্প থেকে বৃহত্তর শিল্পে পরিণত করা হবে। ফিরিয়ে আনা হবে স্বর্ণ শিল্পের হৃত গৌরব।
রবিবার দুপুরে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন অফিসার্স ক্লাবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাজুস চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি মৃণাল ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাজুস কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি গুলজার আহমেদ ও মো. আনোয়ার হোসেন।

ডা. দীলিপ রায় বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদেরকে একটি সময়োপযোগী স্বর্ণ নীতিমালা উপহার দিয়েছেন। এই নীতিমালার মাধ্যমেই সমৃদ্ধ হবে দেশের স্বর্ণ শিল্প। অতীতে বাঙালি স্বর্ণশিল্পে সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু একটি আধুনিক নীতিমালা না থাকায় শিল্পটি ক্রমান্বয়ে তার গৌরব হারাতে বসে। হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করেও কালোবাজারি বলা হতো। ব্যাংক ঋণ দিতে চায় না। এখন নীতিমালা হয়েছে। আমরা মর্যাদার সঙ্গে ব্যবসা করতে পারব।

তিনি বলেন, বাজুসের বর্তমান সভাপতি একটি গোল্ড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে একটি শক্তিশালী কমিটিও গঠন করা হয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সেই ব্যাংক থেকে ঋণ পাবে। অর্থের কারণে কোনো ব্যবসায়ীকে সমস্যায় পড়তে হবে না। অর্থ সংকট না থাকলে জুয়েলারি শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নীতিমালা দিয়েছেন, বর্তমান সভাপতি আমাদেরকে দক্ষ নেতৃত্ব এবং আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ডা. দীলিপ রায় বলেন, বাজুসের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গোল্ড রিফাইনারি করছেন। এখানে স্বর্ণের বার তৈরি হবে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। দেশে তৈরি স্বর্ণ বিদেশে রপ্তানি হবে। এ স্বর্ণের বারে লেখা থাকবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা খচিত স্বর্ণের বার। এটি আমাদের জন্য গর্বের। এর মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক আয়ও বাড়বে। সঙ্গে দেশের স্বর্ণ খাতের কারিগরদেরও মূল্যায়ন হবে।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান সভাপতির উদ্দেশ্য, দেশের সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ী অবশ্যই বাজুসের সদস্য হবেন। জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বর্ণ ব্যবসায়ীও বাজুসের সদস্য হয়ে যাবেন। সবাই সদস্য হলে সুন্দর পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনা করার একটি আঙিনা তৈরি হবে। যেকোনো সমস্যায় বাজুস স্বর্ণ ব্যবাসায়ীদের পাশে থাকবে। সদস্য না হলে তাদের ব্যাপারে বাজুস কোনো দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। যারা সদস্য হবে তারা ঋণ পাবে, গোল্ড বার পাবে, সরকারি সুবিধা পাবে। তাদের বিপদে সমিতি পাশে থাকবে। তাই প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে। এরপরই বৃহত্তম পরিসরে বিশাল আকারের মহাসমাবেশ করা হবে।
তিনি বলেন, বাজুসের বর্তমান সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে এবং প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে দেশের আটটি বিভাগে প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব বিভাগের সমাবেশ শেষ হলে আমরা ঢাকায় মহাসমাবেশের আয়োজন করব। মহাসমাবেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি হিসাবে পাওয়ার পরিকল্পনা আছে। এটি হবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জন্য একটি মাইলফলক ইতিহাস। সে লক্ষ্যেই আমরা আগাচ্ছি।

ডা. দিলীপ রায় বলেন, আজ আমরা গর্ব করে বলতে পারতেছি, বাজুস বর্তমান সভাপতির নেতৃত্বে জুয়েলারি শিল্পে নতুন দিনের সুর্য্য উদিত হয়েছে। দেশেই যখন গোল্ড রিফাইনারি হচ্ছে, তাহলে এখন আর আমাদেরকে বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হবে না। বরং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তাই স্বর্ণ শিল্পের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এখন আমাদের প্রয়োজন সকলের ঐক্য।

বাজুস কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, আমরা বলব, এখন জুয়েলারি শিল্পে নতুন দিগন্ত শুরু হয়েছে। গোল্ড ব্যাংক হবে বাজুসের বর্তমান সভাপতির নেতৃত্বে। এটি চাট্টিখানি কথা নয়। সকলকে নিয়েই এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাই ব্যাংক থেকে নামমাত্র সুদে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। সমৃদ্ধ হবে ব্যবসা।
তিনি বলেন, বর্তমান সভাপতির মানসিকতা হলো- প্রতিটি কাজই খুব দ্রæততার সঙ্গে এবং সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে। সকালে যা বলা হবে বিকালেই তার সুফল চাই। আমার মনে হয়, তাঁর কাছে নেই বলতে কোনো শব্দ নেই। আন্তরিকতা ও চেষ্টা দিয়ে কাজ করে তিনি সফল হতে চান।

বাজুস কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ঢাকায় একটি গোল্ড এক্সিবিশন করব। যেখানে সারা দেশের ৬০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। এই চট্টগ্রাম থেকেও স্বর্ণ ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করবেন। ব্যবসা সম্প্রসারণে এটি একটি নতুন উদ্যোগ।

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান সভাপতির মূল্য লক্ষ্যই হল দেশের স্বর্ণ খাততে বিকশিত করে দেশের বেকারত্ব দূর করা। এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ইতোমধ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আশা করি আপনারা সকলেই এক সঙ্গে থাকলে আগামীতে বহুদূর পথ পাড়ি দেয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাজুস চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রণব সাহা। বাজুস চট্টগ্রাম শাখার যুগ্ম সম্পাদক কাজল বণিক ও হিরন্ময় ধরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাজুস যশোর শাখার সভাপতি রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী, বাজুসের ডেপুটি ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম, বাজুস চট্টগ্রামের সহ সভাপতি সুধীর রঞ্জন বণিক।

অনুষ্ঠান শুরুর আগে ফুল দিয়ে অতিথিদের বরণ করেন বাজুসের চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া বাজুস চট্টগ্রাম শাখার পক্ষ থেকে অতিথিদের উত্তরীয় পড়িয়ে দেয়া হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by